খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে দুই আইনজীবীর আবেদন
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১১:৩৫ | আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৩:২৫
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা : পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের অস্থায়ী আদালতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার প্রথম দিনের শুনানিতে হাজির হলেও দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে হাজির হননি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শারীরিক অসুস্থতার কারণে আদালতে উপস্থিত হতে পারবেন না বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে এই মামলার বিচার চলবে কি না সে বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) তার আইনজীবীদের বক্তব্য শুনবেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান।
একই সঙ্গে বুধবারে হওয়া (১২ সেপ্টেম্বর) খালেদা জিয়ার জামিন বৃদ্ধির আবেদনের ওপরও শুনানি হবে বৃহস্পতিবার।
এছাড়া খালেদা জিয়া আদালতে আসতে অনিচ্ছুক, বলে বুধবার কাস্টডিতে যে লিখে পাঠিয়েছেন সেই বিষয়ে জানতে এবং তার সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া এবং মাসুদ আহমেদ তালুকদার। তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আইনি বিষয়ে পরামর্শ ও তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতেও এই আবেদন করেছেন তারা। বৃহস্পতিবার এই আবেদনের ওপরও শুনানি হবে।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করবেন তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার।
বুধবার দুই পক্ষের দীর্ঘ শুনানির এক পর্যায়ে আদালত বলেন, ‘উনি (বেগম খালেদা জিয়া) আদালতে আসতে যদি অনিচ্ছুক হন তাহলে আমরা মামলা চালাতে পারবো কিনা বা তাকে বাদ দিয়ে মামলা চালাবো কিনা এ পয়েন্টে আপনারা বক্তব্য দেন।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতে জিয়া চ্যারিটেবল মামলার বিচার চলবে কিনা এবং তার জামিনের মেয়াদ বাড়ার বিষয়ে আইনি ব্যাখ্যাও চান আদালত।
এসবেরই জবাব দিতে হবে আইনজীবীদের।
গত বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) প্রথমবারের মতো নাজিমউদ্দিন রোডের এই পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হয়ে বলেন, অসুস্থতার কারণে তিনি আর আদালতে হাজির হতে পারবেন না। আদালত তাকে যা খুশি সাজা দিতে পারেন। তার আইনজীবীরাও সেদিন উপস্থিত হননি আদালতে।
এর আগে, রাষ্ট্রপক্ষ কারাগারে অস্থায়ী আদালত স্থাপন করে এই মামলার কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করে। রাষ্ট্রপক্ষ বলেন, অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়া এই মামলায় বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসায় স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতে শুনানির জন্য হাজির হতে পারছেন না এ পরিস্থিতিতে বিচার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা আদালতকে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরের আবেদন জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ সেপ্টেম্বর এই কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষকে অস্থায়ী আদালত হিসেবে ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। যদিও খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা দাবি করেন, তারা আদালত স্থানান্তরের কোনো নোটিশ পাননি। সে কারণে ৫ সেপ্টেম্বরের শুনানিতে তারা কারাগারের আদালতে উপস্থিত হননি। পরে আদালত আজ ১২ সেপ্টেম্বর মামলার শুনানির জন্য নতুন দিন ঠিক করে দেন।
দুর্নীতির এই মামলায় মোট আসামি চার জন। খালেদা জিয়া ছাড়া অভিযুক্ত অন্য তিন আসামি হলেন— খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
২০১১ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।
মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করেন।
সারাবাংলা/এসএমএন/জেএএম