Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘এখনো অপেক্ষায় থাকি ছেলে কখন ফিরবে’


৩ আগস্ট ২০১৮ ১৬:২১ | আপডেট: ৩ আগস্ট ২০১৮ ১৬:২৭

।। আবদুল জাব্বার খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: প্রতিদিন ক্লাস থেকে ফিরে ছেলে আমার কাছে খাবার চাইতো। আমি খাবার রেডি করে রাখতাম। ছেলে খাবার খেয়ে বাইরে যেত। সন্ধ্যা হলে বাসায় ফিরে আসতো। আজকে এক মাস ধরে প্রতিদিন বিকেলে আমার ছেলে ঘরে ফেরার অপেক্ষায় থাকি। কিন্তু আমার ছেলে ফিরে আসে না। আমি অপেক্ষায় থাকি কখন ছেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিরবে, আমার কাছে খাবার চাইবে। আমাকে মা বলে ডাকবে। এভাবেই অশ্রুসজল চোখে নির্মমভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলের কথা বলছিলেন এক মা।

বিজ্ঞাপন

গত ২ জুলাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএ শেষ বর্ষের ছাত্র সৈয়দ মাসুদ রানা মিরপুর ঈদগাহ ময়দান পুলিশ বক্সের সামনে বাস চাপায় নিহত হয়। আজও শুকায়নি নিহত মাসুদ রানার মার কান্না।

ছেলে হত্যার অভিযোগ তুলে শুক্রবার (৩ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করছেন নিহত মাসুদ রানার মা-বাবাসহ স্বজনেরা। তরতাজা ছেলেকে হারিয়ে শোকে পাথর এই মা যখন নিজেকে সামলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তখনই রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় নিজের ছেলেকে হারানোর শোক তাকে যেন ঘিরে ধরেছে আবারও। এ কারণে নির্মম এ হত্যার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন তিনি। এ সময় কথা হয় মাসুদ রানার মায়ের সঙ্গে।

তিনি জানান, গত ২ জুলাই আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। আমার বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় আমাকে বলেও যেতে পারেনি। দুপুরের দিকে সংবাদ পাই আমার ছেলে অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। আমি তখন বলি আমার ছেলের তো মোটর সাইকেল নেই। আমার ছেলে কীভাবে অ্যাক্সিডেন্ট করবে। তারপরও আমার ছোট ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে চলে যায়। হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার বাবার নিথর দেহ পড়ে…। আমার ছেলে আমার সঙ্গে একটি কথাও বলে গেল না। এখন শুধু আমার চোখে পানি। আমার ছেলেকে ছাড়া আমি কিছুই ভাবতে পারছি না।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমি ওই চালক ও বাস মালিকের বিচার চাই। অকালে এরকম যাতে আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়, প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি সে জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন।

মাসুদ রানার মায়ের মতো নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পায়েল হত্যার প্রতিবাদেও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করছেন তার স্বজনেরা।

উল্লেখ্য, গত রোববার (২৯ জুলাই) রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহেনের দুই বাসের রেষারেষিতে নিহত হয় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া আক্তার মীম ও আব্দুল করিম। এরপর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এই হত্যার বিচার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে। যা পর্যায়ক্রমে গণদাবিতে পরিণত হচ্ছে।

সারাবাংলা/এজেডকে/এমআই

মাসুদ রানা মিরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত