‘মাটি তো আর কেউ ব্যাংকে জমা দেয় না’
১৯ জুলাই ২০১৮ ২২:২৭ | আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৮ ২২:৩৮
।। এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে সোনা হেরফেরের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ে দেশজুড়ে তোলপাড় তুলেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীনস্থ শুল্ক গোয়েন্দার এক প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। ঘটনাটি তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে রাজনৈতিক মহলেও। এ নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোও বিব্রত। পরিস্থিতি সামলাতে দফায় দফায় বৈঠক চলছে কর্মকর্তাদের মধ্যে। সূত্র বলছে, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বিদেশ থেকে ফেরার পর এ নিয়ে তদন্ত কমিটিও গঠিত হতে পারে।
‘সোনা কাহিনী’ নিয়ে সম্প্রতি সারাবাংলার সঙ্গে আলাপ হয় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. সহিদুল ইসলামের। তিনি জানান, ঘটনার শুরু মূলত ২০১৬ সালে। ২০১৭ সাল জুড়ে এর পুরো কার্যক্রম চলে। চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয় বাংলাদেশ ব্যাংকে।
তবে তার ভাষ্য বিষয়টি গণমাধ্যমে যেভাবে এসেছে আসলে ব্যাপকতা ততোটা নয়। যদিও ইতোমধ্যে এটি জনমনে ভীতি সৃষ্টি করেছে। তার দাবি- প্রতিবেদনটি তৈরির পর তারা সেটি এনবিআরের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠান। এনবিআর পত্রটি ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সেটি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠায়। গতকাল (বুধবার ১৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এনবিআরে একটি পর্যবেক্ষণ বা চিঠি পাঠানো হয়েছে। সহিদুল বলেন, ‘এটি এখনও আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। এনবিআর যে রিপোর্টটি পাঠিয়েছে, তারা নিশ্চয়ই দেখেশুনেই পাঠিয়েছে। এটি তাদের স্বচ্ছতার সঙ্গেই পাঠানোর কথা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন পেলেই আমরা বলতে পারব।’
সহিদুল বলেন, ‘যা কিছু আছে সবই রেকর্ড আছে। কতোটুকু স্বর্ণ পেল, কী স্বর্ণ গেল। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ পেলে কোন গ্যাপ আছে কি-না, তা যথেষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।’
সারাবাংলা: আপনাদের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ‘সোনার বদলে মাটি’ বলে কি কিছু উল্লেখ ছিল?
সহিদুল ইসলাম: এটি সম্পূর্ণ একটি গোপনীয় প্রতিবেদন এবং খুবই সেনসেটিভ প্রতিবেদন। মাটি তো আর কেউ জমা দেয় না। মাটি জমা দেওয়ার কথা না। যেহেতু এটি খুবই গোপনীয় ও সেনসেটিভ প্রতিবেদন এবং ব্যাপক জিজ্ঞাসা তৈরি হয়েছে এবং এর গুরুত্ব অনেক বেশি, এ পর্যায়ে এটি নিয়ে এত বেশি কথা বলার সুযোগ নেই। যে প্রতিবেদন এখান থেকে গিয়েছে, মাটি এই রকম প্রতিবেদনে আছে কিনা; তা দেখতে হবে। এই রকম থাকার কথা না। কিন্তু যাই এসেছে, কিছু পর্যবেক্ষণ আছে। পর্যবেক্ষণগুলো নিয়ে যেহেতু বিতর্ক এবং ভিন্নমত তৈরি হয়েছে, সুতরাং আমরা যখন এটি লিখিতভাবে পাবো, পত্র-পত্রিকায় বা মৌখিকভাবে শুনেছি, যখন এনবিআরের মাধ্যমে আমাদের কাছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ পাবো চিঠি পাবো, প্রতিবেদনে কোন গ্যাপ আছে কি-না তা নিয়ে যথেষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। তবে প্রতিবেদনে ‘মাটি’র বিষয়টি উল্লেখ থাকার কথা না।
সারাবাংলা: অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ‘ধারণাগত ফারাক’ থাকতে পারে। এক্ষেত্রে কী বলবেন?
সহিদুল হক: মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বলেছেন। তার মন্তব্যের ওপর তো আমার কথা বলার সুযোগ নেই বা কথা বলাটা সমীচীন নয়। জেনেশুনে বুঝে রাষ্ট্রের দায়িত্ব নিয়েই কথা বলেছেন। তিনি আমাদের গার্ডিয়ান। স্যার গতকাল দুই পক্ষের কথাই শুনেছেন। এবং অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে দুই পক্ষ কথা বলেছি। যে আলোচনা সেটা কীভাবে দ্রুত নিরসন হয় এবং আইনানুগভাবে, সে ব্যাপারে কথা হয়েছে। এটি স্যারই বলেছেন মাননীয় মন্ত্রী বিদেশ থেকে দেশে আসলে তিনিই পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন। আমরা অপেক্ষা করছি, মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশনা পেলে, এনবিআর হয়ে আমাদের কাছে কোনো পর্যবেক্ষণ এলে, তখনই আমরা এ বিষয়টা দেখব।
সারাবাংলা: এয়ারপোর্টের কাস্টমস অফিসার ও গুদাম সংরক্ষক হারুনকে ডাকা হলে তিনি ব্যাংকে লিখিত দিয়ে বলেছেন, যে চাকতি জমা দিয়েছিলেন, সেই চাকতিই সংরক্ষিত আছে।
সহিদুল ইসলাম: এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে পারে ঢাকা কাস্টম হাউজ। এ বিষয়ে ঢাকা কাস্টম হাউজের কমিশনারকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। তাকে (হারুন) অফিসিয়ালি ডাকা হয়েছিল কি-না? অফিসিয়ালি সে লিখিত দিয়েছিল কি-না? তার দেওয়ার এখতিয়ার আছে কি-না? তিনি ওটা দেখেছিলেন কি-না? অনেকগুলো প্রশ্ন আছে। ওটা ওখান থেকে জানলেই আমার মনে হয় আপনাদের জন্য যৌক্তিক হবে। এটা আমি পত্রিকার মাধ্যমে দেখেছি। কিন্ত এক্ষেত্রে তিনি অফিসিয়ালি দিয়েছেন কি-না, সেটা একটা জানার বিষয় আছে। এরকম মতামত দেয়ার এখতিয়ার খুব একটা থাকার কথা না। যদি তার কতৃপক্ষ অনুমোদন না দিয়ে থাকেন।
সারাবাংলা: কাস্টমস তো আপনাদেরই..
সহিদুল ইসলাম: ঠিকই আছে। কিন্তু এটা ভিন্ন দফতর। ঢাকা কাস্টমস হাউজে একজন কমিশনার বসেন। সুতরাং ওই কর্মকর্তা ওই দফতরের আওতায় আছেন।
সারাবাংলা: ক্ল্যারিকাল মিসটেক অর্থাৎ ৪০ ও ৮০ শতাংশের মধ্যে যে ভুল হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এক্ষেত্রে আপনাদের হাতে থাকা প্রত্যয়নপত্রে ঠিক কী উল্লেখ ছিল?
সহিদুল ইসলাম: এর বিস্তারিত আপনারা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেই জানতে পারবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক যে প্রতিবেদন (প্রত্যয়ন) দিয়েছিল, প্রতিবেদনে যা উল্লেখ করেছিল, পরবর্তীতে যা পাওয়া গিয়েছিল, সেটাই ওই প্রতিবেদনে আছে। তখন এই ধরনের ভুল-ভ্রান্তির কথা তারা এনেছিলেন কি-না, সেটি তাদের কাছে জানলেই বেটার হবে। যখন তারা এটি লিখেছিলেন, ভুলটা কোন পর্যায়ে হয়েছে, এই দফতর করেছে? যদি ভুলই ধরি আরকি। বাংলাদেশ ব্যাংক যে প্রত্যয়পত্র দিয়েছে, ভুলটা তারা করেছে কি-না, ভুলটা তারা করে থাকেন, সে বক্তব্যটা তারাই ভালো দিতে পারবেন। এবং পরবর্তীতে যখন তদন্ত কমিটি হয়েছিল, ভুলটা তাদের (শুল্ক গোয়েন্দা) সামনে এনেছিলেন কি-না, এই জিজ্ঞাসাগুলো আমার মনে হয় বাংলাদেশ ব্যাংককে করলেই ভালো হয়। প্রশ্নটা যদি এমন হতো তারা (বাংলাদেশ ব্যাংক) ৮০ উল্লেখ করেছিল, আমরা ৪০ উল্লেখ করেছি; তাহলে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করতে পারতেন। আমরা এটার জবাব দিতে পারতাম। ভুলটা কার? ভুলটা আমাদের কি-না?
সারাবাংলা: আপনাদের ভুলের ক্ষেত্রে তারা বারবার বলছিল যে, সোনা পরিমাপের ক্ষেত্রে ডিজিটাল এবং এনালগ পদ্ধতি… আপনারা বাইরে থেকে মেশিন নিয়ে যাচ্ছেন…
সহিদুল ইসলাম: এটা অনেক আগের বিষয়। ২০১৭ সালে হয়েছে। আগের ম্যানেজম্যন্টের সময়ে হয়েছে। তারপরও আমি যতটুকু জানি, রেকর্ডপত্রে যতটুকু দেখলাম, এটি আমাদের মেশিনও না; জুয়েলারি সমিতির সহযোগিতায় মেশিনে হয়েছে। সনাতনী পদ্ধতিও ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের যিনি সনাতনী পদ্ধতি দেখেন অর্থাৎ অভিজ্ঞ তিনিও ছিলেন এবং যিনি গ্রহণ করেন তিনি ছিলেন। আর সনাতনী পদ্ধতিতে জুয়েলারি সমিতির প্রতিনিধি ছিলেন, আধুনিক পদ্ধতির লোকও ছিলেন। এবং এই তিনটার সমন্বয়ে কিন্তু ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছিল। আমরা তাদের পর্যালোচনা প্রতিবেদন যদি পাই, তখন আমরা আসলে বলতো পারবো; আসলে কী আছে। কারণ এটা তো রেকর্ডের আলোকে। ওই সময়ে যিনি কাজে ছিলেন, আগের মহাপরিচালক (ড. মইনুল খান), বা আগে যারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তারা প্রায় সবাই এই দফতরে আর নাই এবং যারা হাতেকলমে কাজ করেছে, যেমন জুয়েলারি সমিতি, তারা কোন ভুল করেছে কি-না। আধুনিক মেশিন ঠিকমতো কাজ করছে কি-না।
সারাবাংলা: শখ জুয়েলার্সের স্বর্ণকার বা মালিক স্পষ্টভাবে বলেছেন তিনি ৪০ বলেছিলেন, এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা ভুলক্রমে ৮০ লিখেছেন।
সহিদুল ইসলাম: ওই ক্ষেত্রে আমরা বলেছি, ভুলটা কোথায় হয়েছে, তা আপনারা নিরুপণ করবেন। ভুলটা কেন হল, কী জন্য হলো, সেই প্রতিষ্ঠানই বলতে পারবে। যদি আমাদের কোন ভুল থাকে, কোনো কাগজে যদি ৪০ লেখা থাকে, তাহলে আমরা তো ৪০-ই পড়বো। যদি আমরা সেই ৪০ কে ৮০ লিখি, তাহলে আমাদের কাছে প্রশ্ন করা হতো, আমরা হয়ত বলতাম যে, আমরা ভুল করে লিখেছি। ওটা ওই প্রতিষ্ঠানই বলতে পারবে। ভুল তো হতেই পারে। কাজ করতে গেলে।
সারাবাংলা: ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ হয়ে গেল ১৮ ক্যারেট, মেশিনের কথা বলা হচ্ছে, স্বর্ণ পরিমাপে আপনারা কতটুকু আধুনিক?
সহিদুল ইসলাম: আমাদের নিজস্ব কোনো মেশিন নেই। আমরাও জুয়েলারি সমিতির সহযোগিতা নিই। যখন বিমানবন্দরে কোন সোনা ধরা পড়ে তখন আমরা তাদের কাছে দেখিয়ে নিই, এটা কত ক্যারেটের। এছাড়া গোল্ডের গায়ে লেখা থাকে, এটা ২২ ক্যারেটের, ২১ ক্যারেটের, ১৮ ক্যারেটের। অনেক সময় গায়ে লেখা থাকে। কাজ করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা তৈরি হয় তার অলোকে দেখলেও আমরা অনেক সময় বুঝতে পারি। তারপর এটা যখন বাংলাদেশ ব্যাংকে যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই তারপর রাখে। ওনাদের যেহেতু এক্সপার্ট আছে, ওনারা পরীক্ষা করে যে প্রতিবেদন (প্রত্যয়ন) দেয়, ওইটাই আমাদের কাছে রাখি এবং এক্সেপ্ট করি।
সারাবাংলা: উদ্ধারকৃত সব সোনাই কী বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা হয়…
সহিদুল ইসলাম: উদ্ধারকৃত সকল সোনা শুল্ক গোয়েন্দা জমা দেয় কাস্টমস হাউজে। কাস্টমস হাউজের দায়িত্ব হচ্ছে এটি বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়ে দেয়া। আমরা জানি এই তদন্ত যখন হয় ক্রস গণনা হয়। এটি সব সময় জমা হয়।… মামলা থাকে… বিচারিক প্রক্রিয়ায় কেউ কেউ ফেরত পেতে পারেন। এটি অত্যন্ত সেনসেটিভ। যারা দায়িত্ব পালন করে তারা অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করে ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করে।
সারাবাংলা: উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিতে শুল্ক গোয়েন্দা কী কোন প্রশ্নের মুখে পড়েছে?
সহিদুল ইসলাম: আমি তো মনে করি, এখনও কোন প্রশ্নের মুখে পড়েনি। কারণ যা গেছে লিখিত। আমরা যদি লিখিত বক্তব্য পাই, পর্যালোচনা করে পাই, তাহলে আমাদের বক্তব্য দিতে পারবো। যে করণিক ভুলের কথা আসছে, সেই ভুলটা তো যেখান থেকে উদ্ভব হয়েছে, আমাদের দফতরের কোন সুনির্দিষ্ট ভুল আছে কি-না; এখনও মিডিয়াতেও দেখিনি। অথবা বাংলাদেশ ব্যাংক বা এনবিআর থেকে এখনও পাইনি। পেলে আমরা পর্যালোচনা করে বলতো পারবো যে, এই দফতরের যে কার্যক্রম, তৎকালীন যে কর্মপদ্ধতি বা যেভাবে কাজ করেছিলেন, তার মধ্যে কোনো গ্যাপ আছে কি-না, ভুল আছে কি-না; তখন বলা যাবে।
সারাবাংলা: কোনো ধরনের কোনো চাপে আছেন কী?
সহিদুল ইসলাম: আমরা কোনো সময় কোনো চাপে থাকি না (হাসি…)। চাপের মধ্যে কাজ করার জন্য তৈরি থাকি ( হা হা..)। দেশের স্বার্থে কাজ করছি। জনগণের জন্য কাজ করছি। মানুষের প্রত্যাশার জন্য কাজ করছি। এর মধ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। এবং ইনশাল্লাহ দেশবাসীর জন্য, জনগণের জন্য সঠিক যে কাজ, সঠিক যে দায়িত্ব, সরকার যেহেতু আস্থা নিয়ে এখানে বসিয়েছেন, সরকারের সাফল্য তৈরি করার জন্য এবং এই দফতরের যে কাজ- তা ধারাবাহিকভাবে করে যাব।
সারাবাংলা: সারাবাংলা ডটনেটের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
সহিদুল ইসলাম: আপনাকেও ধন্যবাদ।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে
আরও পড়ুন
ভল্টের সোনায় হেরফের: অর্থপ্রতিমন্ত্রীর অস্বীকার