ট্রাক উল্টে ১৩ শ্রমিকের মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ কেন নয়: হাইকোর্ট
২৯ জুলাই ২০১৯ ১৮:১৬ | আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ১৮:৩৮
ঢাকা: কুমিল্লার এক ইটভাটায় ট্রাক উল্টে ১৩ শ্রমিকের মৃত্যু ও ২ জন আহত হওয়ার ঘটনায় প্রত্যেকের পরিবারকে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নিহত ও আহতদের জীবন রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন বেআইনি হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
মৃতদের পক্ষে দুই স্বজনের করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (২৯ জুলাই) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের এর হাইকোট এ রুল দেন। স্বরাষ্ট্র সচিব, অর্থ সচিব, পরিবেশ সচিব ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসকসহ ছয়জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মিজবাহুল আনওয়ার। তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী মো. সোহরাব হোসেন ও মো. জামাল উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
গত ২৫ জানুয়ারি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ঘোলপাশা ইউনিয়নের করিমপুরে ঘুমন্ত ইটভাটার শ্রমিকদের ওপর ট্রাক উল্টে পড়লে ১৩ জন শ্রমিক মারা যায়। নিহত শ্রমিকদের সবার বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায়। এ নিয়ে বেশকয়েকটি দৈনিকে প্রকাশিত খবর প্রকাশ হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়কের পাশে করিমপুর (দোসরী) গ্রামের বিশাল ফসলি জমিতে গড়ে ওঠা ‘কাজী অ্যান্ড কোং’ নামে ইটভাটার ঝুপড়ি ঘরে গাদাগাদি করে ঘুমাতেন শ্রমিকরা। ওইদিন ক্লান্ত শরীরে ঘুমিয়ে ছিলেন সবাই। ভোরের দিকে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা কয়লাভর্তি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট-১৬-০১১৪) থেকে কয়লা নামানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ট্রাক শ্রমিকরা। এ সময় ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ইটভাটা শ্রমিকদের থাকার ঘরের ওপর গিয়ে উল্টে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মারা যান ১২ শ্রমিক। গুরুতর আহত একজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।
মৃতরা হলেন নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার নিজপাড়া গ্রামের সুরেশ চন্দ্র রায়ের ছেলে রঞ্জিত চন্দ্র রায় (৩০), তার ভাই তরুণ চন্দ্র রায় (২৫), জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো. সেলিম মিয়া (২৮), অমল চন্দ্র রায়ের ছেলে দিপু চন্দ্র রায় (১৯), কিশোর চন্দ্র রায়ের ছেলে শংকর চন্দ্র রায় (২১), রামপ্রসাদের ছেলে বিপ্লব চন্দ্র রায় (১৯), কামিক্ষার ছেলে অজিত রায় (২০), শিমুলবাড়ি গ্রামের মনোরঞ্জন চন্তদ্র রায় (১৯), খোকা চন্দ্র রায়ের ছেলে মৃণাল চন্দ্র রায় (২১), পাঠানপাড়া গ্রামের নুর আলমের ছেলে মো. মোরসালিন (১৮), ফজলুল করিমের ছেলে মাসুম (১৮), রাজবাড়ি গ্রামের খোকা চন্দ্র রায়ের ছেলে বিকাশ চন্দ্র রায় (২৮) ও ধলু চন্দ্র রায়ের ছেলে কনক চন্দ্র রায় (২৫)। গুরুতর আহত দুজনক হলেন- বিষ্ণু চন্দ্র, মো. রিপন।
এ ঘটনায় জুন মাসে রিট আবেদনটি করেন নিহত রঞ্জিত চন্দ্র রায় ও তরুণ চন্দ্র রায়ের পিতা সুরেশ চন্দ্র রায় ও মো. সেলিম মিয়ার পিতা মো. জাহাঙ্গীর আলম।