সাড়ে ৩শ কর্মীকে বিনা নোটিশে ছাঁটাই পাঠাওয়ের!
২৬ জুন ২০১৯ ০১:৩৬ | আপডেট: ২৬ জুন ২০১৯ ১২:৫৩
ঢাকা: সকালে অফিসে ঢুকতে অতিরিক্ত সিকিউরিটি গার্ড দেখতে পান তারা। তারপর জোর করে স্বাক্ষর আদায় করে চলে যেতে বলা হয়। এই শেষ! অভিযোগ রয়েছে, এভাবে সাড়ে ৩’শ জনকে একসঙ্গে চাকরিচ্যুত করেছে রাইড শেয়ারিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান পাঠাও। তবে এ বিষয়ে মুখ খুলছে না প্রতিষ্ঠানটি। ফোন বন্ধ রয়েছে পাঠাওয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হুসেইন মোহাম্মদ ইলিয়াসেরও।
চাকরি হারানো কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়েছে সারাবাংলার এ প্রতিবেদকের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, বিভিন্ন বিভাগ মিলিয়ে সাড়ে ৩শ জনকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। কোনো নোটিশও দেয়া হয়নি। অফিসে এসেই তারা পড়েন বিপদের মুখে। কোন কারণ ছাড়াই তাদের চলে যেতে বলা হয়। কেউ কেউ কাগজে স্বাক্ষর না দিলে জোর জবরদস্তি করা হয়। এমন অবস্থায় তাদের অনেকেই বের হয়ে যান।
তারা বলছেন, পাঠাও অর্থ সংকটে ভুগছে। ফান্ড পাচ্ছে না। অনেকটা দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এটা আগে না বলে সময় না দিয়ে হঠাৎ একসঙ্গে চাকরিচ্যুত করে তাদের সঙ্গে চরম অন্যায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
পাঠাও সূত্র জানায়, বিভিন্ন অফার ও সুযোগ সুবিধার লোভ দেখিয়ে পাঠাওয়ে তাদের চাকরি দেওয়া হয়। ভালো চাকরি ছেড়ে এসে অনেকে পাঠাওয়ে যোগ দিয়েছিলেন। প্রথম প্রথম ভালোই চলছিল তাদের। এদিকে, চাকুরিচ্যুতরা এখন কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
কোরিয়ার সার্ভিস হিসেবে যাত্রা শুরু করা পাঠাও তিনবছর আগে ঢাকায় রাইড শেয়ারিং শুরু করে। উবার কার চালু হওয়ার পর পাঠাও শুরুতে ৫০টি মোটরসাইকেল কিনে বাইকার দিয়ে রাইড দেওয়া শুরু করে। এরপর রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে বাইকার নিয়ে পাঠাও জনপ্রিয় হতে থাকে। দুর্ঘটনাসহ বাড়তি ভাড়া আদায় ও গ্রাহকের মোবাইলের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে পাঠাওয়ের বিরুদ্ধে।
২০১৬ সালের ৭ মে রাজধানী ঢাকায় প্রথম মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং শুরু করেছিল ‘শেয়ার এ মোটরসাইকেল’ সংক্ষেপে ‘স্যাম’ অ্যাপ । ঠিক এর সাত মাসের মাথায় ঢাকায় উবার প্রাইভেট কারে রাইড শেয়ারিং চালু করে। এর পরের মাস ডিসেম্বরে দেশীয় প্রতিষ্ঠান পাঠাও মোটরসাইকেল সেবা চালু করে।
দেশে ২০১৭ সালে অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবা অর্থাৎ রাইড শেয়ারিং সার্ভিস পরিচিত হতে থাকে। এর মধ্যে উবার প্রাইভেট কারের সঙ্গে মোটরসাইকেল এবং পাঠাও মোটরসাইকেলের সঙ্গে পাঠাও কার সার্ভিস চালু করে। ২০১৮ সালে রাজধানী ঢাকায় লাখ লাখ মোটরসাইকেল ও হাজার হাজার প্রাইভেট কার রাইড শেয়রিংয়ে দেখা যায়। এখন রাজধানীতে পথে নামলেই উবার পাঠাও মোটরসাইকেলে প্রাইভেট কার চলতে দেখা যায়।
সারাবাংলা/এসএ/ইএইচটি/এনএইচ
আরও পড়ুন:
মোটরসাইকেলে আড়াই হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ, বদলে যাচ্ছে জীবন
পাঠাও’র তথ্য চুরি! আইনের ধোপে টিকবে কি ব্যাখ্যা?
পাঠাওয়ে ২০ বছরের পুরনো গাড়ি, সেবার নামে ভোগান্তির অভিযোগ
পাঠাও-উবার ঘিরে ভয়ংকর অপরাধের আশঙ্কা