Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মেয়েটি হাতের ব্যান্ডেজ খুলে ফেলতে চায়’


৮ এপ্রিল ২০১৯ ২৩:২০ | আপডেট: ৮ এপ্রিল ২০১৯ ২৩:২৮

ঢাকা: ‘মেয়েটি হাতের ব্যান্ডেজ খুলে ফেলতে চায়। আমাকে বলে, ‘কাকা আমি পানি খাবো। আমাকে একটু তুলে বসান, হাতের ব্যান্ডেজটা খুলে দিন।’ কিন্তু তাকে তো পানি দিতে নিষেধ করেছেন ডাক্তাররা। আমি বললাম, এখন তো পানি খাইলে সমস্যা হইবো, তুমি পরে খাইয়ো, একটু অপেক্ষা করো।’’ ফেনীতে হত্যাচেষ্টার শিকার হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি মাদ্রাসা-ছাত্রীটি সম্পর্কে এভাবে বলছিলেন তার চাচা। কথাগুলো বলতে বলতে গলা ধরে আসে তার। এ সময় চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৭ এপ্রিল) দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন মাদরাসাছাত্রীর পাশে ছিলেন তার এই চাচা। তিনি বলেন, ‘মেয়েটি সব শুনছে। বুঝতেছেও। আমি অনেক লাইফ সাপোর্ট দেখেছি। কিন্তু এমন দেখিনি। মেয়েটি আমাদের খুব আদরের। সবাই জানেন লাইফ সাপোর্টে কয়জন বাঁচে, কতজন বাঁচে না।’

এই চাচা আরও বলেন, ‘সে আমাকে বলে, আমার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। তাকে আমি মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নিতে বললাম, সে তাই করলো। তারপর হাসিমুখে বলে, এখন ভালো লাগছে। সে তো বুঝতেছে না তার ভেতরের কন্ডিশন কী।’

এদিকে, ‘রোগী ভালো নেই’ মন্তব্য করে বার্ন ইউনিটের সহকারী অধ্যাপক ডা. হোসাইন ইমাম বলেন, ‘‘আজ সকালে যখন সাড়ে ১১টার দিকে তাকে ইনটিউবিশন কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে দিয়েছি। তখনই তার সব ধরনের প্যারামিটার ড্রপ করে। পালস, রক্তচাপ, অক্সিজেন চলাচল—সব ‘ফল’ করে। এরপরই তাৎক্ষণিকভাবে ভেন্টিলেটর দেওয়া হয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন রোগী সেই অবস্থাতেই আছে, মেশিনের ওপর বেঁচে আছে। আর এভাবে থাকাবস্থায় রোগী সংকটাপন্ন অবস্থা হতে পারে। কারণ তার ‘সিভিয়ার সেপটিসেমিয়া’ আছে।’’

আরও পড়ুন: প্রয়োজনে সেই ছাত্রীকে সিঙ্গাপুর নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

বার্ন ইউনিটের লাইফ সাপোর্টে থাকা মাদরাসাছাত্রীকে প্রয়োজনে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলার পর ডা সামন্ত লাল সেন হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি ওই ছাত্রীর কাগজপত্র প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। দরকার হলে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে।’

বিজ্ঞাপন

সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘রোগীর যে অবস্থা, এমন পোড়া রোগীকে সাধারণত সিঙ্গাপুর নেওয়া হয় না। তারপরও দরকার হলে সিঙ্গাপুর নেব। কাগজপত্র গোছানোর কাজ শুরু করেছি।’

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে সোনাগাজী থানায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ছাত্রীর মা। ঘটনার সত্যতা পেয়ে ওইদিনই অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৭ মার্চ সকালে পিয়নের মাধ্যমে ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে ডেকে নেন অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলা। সেখানে ওই শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করে আসামি।

এরপর গত শনিবার (৬ এপ্রিল) অধ্যক্ষের অনুসারীরা ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদাসা কেন্দ্রে এই ছাত্রীর গায়ে আগুন দিয়ে হত্যাচেষ্টা করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই দিনই তাকে ঢামেকে এনে ভর্তি করা হয়।

 সারাবাংলা/জেএ/এমএনএইচ

আরও পড়ুন

মাদরাসা ছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা, ২ দিন পর মামলা
প্রশ্নফাঁসের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন হয়রানি করতো অধ্যক্ষ
‘আর ভিডিও করিছ না, আমার ঝিরে আইনা দে’
‘বল সব মিথ্যা, ২৭ তারিখের যৌন হয়রানি মিথ্যা’

ফেনী মাদরাসাছাত্রী

বিজ্ঞাপন

লন্ডনের পথে খালেদা জিয়া
৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৩৯

আরো

সম্পর্কিত খবর