মিন্টো রোডে হঠাৎ পতিত যুবকটি জঙ্গি নয় তো? (ভিডিও)
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২০:০৪ | আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:০৭
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারের অদূরে কাউন্টার টেরোরিজম ভবনের ঠিক সামনে হঠাৎ করেই ঘটে ঘটনাটি। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে একটি দাঁড়িয়ে থাকা প্রাইভেট কারের ছাদের ওপর বিকট শব্দে কিছু একটা পড়ে যায়। উপস্থিত সবাই সেদিকে তাকিয়ে দেখতে পান, এক যুবক গাড়ির ছাদের ওপর থেকে ছিটকে নিচে পড়লেন। তার পরনে জিন্স প্যান্ট ও গোলাপি রঙের টি-শার্ট, মুখে হালকা দাঁড়ি, বয়স ২৫ থেকে ৩০-এর মধ্যে।
একজন জানালেন, তিনি দেখেছেন যুবকটি প্রথমে ইলেকট্রিক তারের ওপর পড়ে সেখান থেকে কয়েক হাত দূরত্বে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িটির ওপর পড়েন। আশপাশে আর কোনো স্থাপনা না থাকায় ধারণা করা হচ্ছিল, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের আট তলা ভবনের ছাদ থেকেই ওই ব্যক্তি লাফিয়ে পড়েছেন।
দ্রুত কাছে গিয়ে দেখা যায়, যুবকটির তখনও জ্ঞান রয়েছে। তবে তার প্যান্টের ডান দিকে পকেটের কাছ থেকে নিচ পর্যন্ত ছিঁড়ে গেছে। উরুর চামড়া কিছুটা ছিলে গেছে। চোখ দুটি বিষ্ফোরিত। তবে মুখে কোনো কথা বা শব্দ করছিলেন না।
উৎসুক উপস্থিত জনতার কয়েকজন দ্রুত ছুটে গিয়ে তার বুক-পিঠ মালিশ করতে থাকেন। কিন্তু কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় কয়েকজন মিলে তাকে চ্যাং দোলা করে অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা গোয়েন্দা পুলিশের একটি গাড়িতে তুলে দেন।
এরপর দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
কে এই যুবক? তা জানতে চেষ্টা করা হলে উপস্থিত কেউ কোনো উত্তর দিতে পারলেন না। কারও পরিচিতও নন এই যুবক।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ভবনের দেয়ালে দড়ি ও বাঁশের মই টানিয়ে কয়েকজনকে কাজ করতে দেখা গেল। তাদের কাছে জানতে চাইলে একজন বললেন, তাদের কেউ নন এই যুবক।
ওদিকে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সারাবাংলা প্রতিবেদক জানান, নানাভাবে চেষ্টা করেও যুবকের পরিচয় জানা যায়নি। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বেশ কয়েকজন সদস্য তাকে ঘিরে রেখেছেন। হাসপাতালের ইমার্জেন্সি কিংবা পরে তাকে নিয়ে যাওয়া চিকিৎসার স্থানে কাউকে যেতে দেওয়া হয়নি। এমনকি সেখানে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদেরও কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, ওই যুবককে জরুরি বিভাগ থেকে প্রথকে নিউরো সার্জারি বিভাগে ও পরে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) পাঠানো হয়।
রাজধানীতে সাধারণের চলাচলে অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত এলাকা এই মিন্টো রোড। এই অংশে পাশাপাশি রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টার, গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান কার্যালয় এবং কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের নবনির্মিত সুউচ্চ ভবন। জঙ্গি দমনে গঠিত এই বিশেষ ইউনিটের কার্যালয়ের ভেতর বিভিন্ন সময় আটক করা জঙ্গিদের রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চলে।
ভবনের ভেতরে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ। কেউ ঢুকতে চাইলে সর্বনিম্ন কোনো একজন সহকারী কমিশনারের (এসি) দেওয়া পাসের ভিত্তিতে মূল গেটে ডাটা এন্ট্রি করে ঢুকতে হয়। প্রবেশকারী বাইরের কেউ হলে তাকে দেওয়া হয় বিশেষ দর্শনার্থীর কার্ড, যা গলায় ঝুলিয়েই ঢুকতে হয় ভেতরে।
এ অবস্থায় অজ্ঞাত পরিচয় এই যুবকটি যদি ভবনে কাজ করা মিস্ত্রিদের কেউ না হন (তার গায়ের পোশাকও সেটা নির্দেশ করছে না) তা হলে তিনি কে? কোনো জঙ্গি নন তো?
https://youtu.be/r2dwT_kHZvg
সারাবাংলা/এমএম