Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ওসি মোয়াজ্জেমের বিচার শুরু


১৭ জুলাই ২০১৯ ১৫:১৪ | আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৯ ১৬:৫৫

ঢাকা: ফেনীর সোনাগাজী মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোর মামলায় সোনাগাজী থানা থেকে প্রত্যাহার হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন বিচার শুরু হয়েছে। সাইবার ট্রাইব্যুনালে চার্জগঠনের মাধ্যমে বুধবার মামলার একমাত্র আসামির বিচার শুরু হলো।

ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে আগামী ৩১ জুলাই মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেছেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন।

বিজ্ঞাপন

চার্জগঠন শুনানির জন্য বুধবার ওসি মোয়াজ্জেমকে দুপুর ২টার সময় আদালতে হাজির করা হয়। এরপর ৫ মিনিট পরে বিচারক এজলাসে ওঠেন। আসামির উপস্থিতিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ ও আবু সাঈদ সাগরসহ অন্যরা চার্জ শুনানিতে অংশ নেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী শুনানিতে বলেন, ‘আসামি যে ভিডিও ছেড়েছে সেই বিষয়ে এজাহারে উল্লেখ নেই। এ মামলার বাদী ব্যারিস্টার সুমন আহমেদ তিনি নিহত নুসরাতের পরিবারের কেউ না। তিনি কেন মামলা দায়ের করলেন? কেন তিনি থানায় গিয়ে মামলা করলেন না। থানা মামলাটিতে থানা না নিতে চাইলে তখন আদালতে আসতে পারতেন। তা না করে সরাসরি আদালতে এসেছেন। নুসরাতের পরিবার যদি মামলা করতে না পারে তাহলে কাউকে ক্ষমতা দিয়ে মামলা করাতে পারতেন কিন্তু এমনটি ঘটেনি।’

শুনানিতে আরও বলেন, ‘যে ভিডিওটি করা হয়েছে সেই ভিডিওটি আসামির মোবাইল থেকে করা হলেও তিনি তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেননি। আর তিনি জোর করে ভিডিও করেনি। তিনি যখন টয়লেটে যান তখন একজন সাংবাদিক তার মোবাইল থেকে ভিডিওটি নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। তথ্য চুরির অভিযোগে সেই সময় তিনি একটা জিডিও করেছিলেন। ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে মামলায় চার্জগঠন করার মতো কোনো আলামত নেই। এমতাবস্থায় আমরা তার অব্যাহতির প্রার্থনা করছি।’ একইসঙ্গে তিনি এদিন ওসি মোয়াজ্জেমের জামিন আবেদন করেন।

বিজ্ঞাপন

অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম (শামীম) চার্জগঠন করার জন্য আবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘এ মামলায় একটা প্রমাণই তার বিরুদ্ধে চার্জগঠন করার জন্য যথেষ্ট আর তা হলো তিনি ভিডিওটি করেছেন কি না? আসামিপক্ষও বলছে না তিনি ভিডিও করেননি। আর ওসি ভিডিও করার সময় নুসরাতকে স্পষ্টভাবে বলেছেন, তুমি যা বলছ তা রেকর্ড হচ্ছে। আর একজন সাংবাদিক তার মোবাইল থেকে ভিডিও নিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন আসামিপক্ষের এমন দাবির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘মোবাইল একটা সিকিউরিট জিনিস আর সেটার সংরক্ষণের দায়িত্ব তার।’

ব্যারিস্টার সুমনের মামলা করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি একজন মানবাধিকার কর্মী, মানবতার কারণেই তিনি এ মামলা করেছেন। আর পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করার ক্ষমতা সকল পরিবারের থাকে না। আর মামলা করার আগে তিনি আবেদন করেছেন। তার যদি মামলা করার অধিকার না থাকত তাহলে আদালতই তখনই মামলাটি খারিজ করে দিতে পারতেন। কাজেই এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা অবান্তর। আর কারো মান-সম্মান নিয়ে খেলা করা ঠিক কাজ নয়।’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘ওসি মোয়াজ্জেমের এমন কাজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। যেখানে ধর্ষিতার নাম প্রকাশ করা যায় না সেখানে তিনি তার নাম, কোথায় কোথায় হাত দিছে তাও প্রচার করা হয়েছে। এমতাবস্থায় আমরা আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠনের প্রার্থনা করছি। আর ওসি মোয়াজ্জেমের জামিনের বিরোধিতা করেন এ পাবলিক প্রসিকিউটর।’

শুনানি শেষে আদালত ওসি মোয়াজ্জেমকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনি দোষী না নির্দোষ?’ উত্তরে মোয়াজ্জেম বলেন, ‘আমি নির্দোষ।’ এরপর বিচারক চার্জগঠন করে সাক্ষীর জন্য আগামী ৩১ জুলাই দিন ঠিক করেন।

গত ১৬ জুন বিকেলে হাইকোর্ট এলাকা থেকে আটক হওয়ার পর ওসি মোয়াজ্জেম শাহবাগ থানা পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। এরপর ১৭ জুন সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

গত ২৪ জুন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে জেল কোড অনুযায়ী ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

গত ১৫ এপ্রিল মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এই আবেদন গ্রহণ করে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

সারাবাংলা/এআই/একে

ওসি মোয়াজ্জেম টপ নিউজ নুসরাত নুসরাত হত্যা ফেনী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর