Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মিয়ানমারে নগদ অর্থ সংকট, দ্বিগুণ হতে পারে দারিদ্র্যের হার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৬ মে ২০২১ ১১:১১ | আপডেট: ১৬ মে ২০২১ ১৪:০১

মিয়ানমারে নগদ অর্থের সংকট আরও গভীর অর্থনৈতিক সংকট ডেকে আনছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এ ব্যাপারে অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফিচ সলিউশন্স জানিয়েছে, ২০২১ সালে মিয়ানমারের জিডিপি ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সতর্ক করে বলেছে, করোনাভাইরাস এবং সেনা অভ্যুত্থানের কারণে মিয়ানমারের অর্থনীতি এখন ধসের মুখে।

২০১৭ সালের প্রথম প্রান্তিকের হিসাবের সঙ্গে তুলনা করে ইউএনডিপি বলেছে, এ অবস্থা চলতে থাকলে পাঁচ কোটি ৪০ লাখ মানুষের এই দেশের প্রায় অর্ধেকই আগামী বছরের মধ্যে দারিদ্র্যের কবলে পড়তে পারে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সংকটের এই ধাক্কায় বিশেষ করে ছোট ব্যবসায় মজুরি এবং আয় অনেক কমে যাবে, খাবারের যোগান এবং মৌলিক চাহিদাসহ সামাজিক নিরাপত্তাও কমে আসবে।

এপ্রিলে প্রকাশিত বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির এক বিশ্লেষণে বলা হয়, মিয়ানমারে সামনের মাসগুলোতে ২০ লাখের বেশি মানুষ খাদ্য সংকটে পড়তে পারে।

গত কয়েক সপ্তাহে ব্যাংকের অল্প কিছু কর্মী কাজে ফিরে গেলেও নগদ অর্থের সংকট থেকে খুব দ্রত উত্তরণের কোনো পথ দেখছেন না বিশ্লেষকরা।

দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুন থেকে ব্যবসায়ী খিন রয়টার্সকে বলেছেন, ডিম-তেলসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্যের সরবরাহ অনেক কমে গেছে। ফলে তিনি ২৫ শতাংশ পর্যন্ত দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন।

দোকানপাট কিংবা বাজারে এখনও মুদি মালামাল পাওয়া যাচ্ছে, বিশ্লেষকদের কেউ কেউ ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত। তারা বলছেন, জুন মাসে বর্ষাকালীন আবাদের সময় কৃষকরা হয়তে বীজ পাবেন না, নয়ত বীজ কেনার জন্য ঋণ পাবেন না।

বিজ্ঞাপন

খিন বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে এরই মধ্যে চাষাবাদ কমে গেছে এবং পরের মৌসুমে এর বড় প্রভাব পড়বে। শস্য সরবরাহকারী এবং মুরগির খামারিরা এভাবে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবেন কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত না।

মিয়ানমারের একজন চাল ব্যবসয়ী, যিনি কয়েকশ কৃষকের কাছ থেকে নিয়মিত চাল কিনে বাজারে সরবরাহ করেন, তিনি বলেছেন, পণ্য সরবরাহের এই চেইন এখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কৃষকের কাছ থেকে চাল কেনার মত নগদ অর্থ তার কাছে নেই। তার মানে হলো, কৃষকের কাছেও বীজ বা কৃষি সরঞ্জাম কেনার কিংবা চাষাবাদের জন্য ক্ষেত মজুরদের দেওয়ার মত নগদ টাকা থাকবে না।

অন্যদিকে, মিয়ানমারের অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইয়াঙ্গুনে বেসরকারি অনেক ব্যাংক জমিজমা এবং ঘরবাড়ির বিপরীতে ঋণ দিচ্ছে। যদিও অভ্যুত্থানের পর থেকে সেখানে সম্পত্তির দামও পড়ে গেছে।

নিরাপত্তা ঝুঁকির জন্য মিয়ানমারের বেসরকারি ব্যংকগুলোকে গ্রাহকের রাখা অর্থের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখতে হয়। দুজন ব্যাংক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের ব্যাংক দরকারের চেয়েও বেশি জমা রেখেছে কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাড়তি সেই অর্থ তোলার অনুমোদন দিচ্ছে না। ফল গ্রাহককে অর্থ দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।

মিয়ানমারের শীর্ষস্থানীয় একটি ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভ্যুত্থানের পর প্রথম দুই মাস ব্যাংকের শাখাগুলো বন্ধ রাখা হয়েছিল বলে সঞ্চয় তুলে নেওয়ার হিড়িক এড়ানো গেছে।

তিনি বলেন, এটা ভালো যে ব্যাংক খোলা ছিল না। যদি ব্যাংক খোলা থাকত, তাহলে তাদের কাছে সবার আমানত ফেরত দেওয়ার মত যথেষ্ট অর্থ থাকতো না।

সারাবাংলা/একেএম

দারিদ্র্যের হার নগদ অর্থ সংকট মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর