পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছে না চুয়াডাঙ্গার কৃষকরা
২৫ আগস্ট ২০১৯ ০৭:২০
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ এখন পাট কাটার সময়। সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। এরপরও চুয়াডাঙ্গার অধিকাংশ কৃষক এখনো পাট কাটা শুরু করেননি। কারন এরই মধ্যে যারা পাট কেটেছেন তারা জাগ দেওয়ার জন্য পানি পাচ্ছেন না। অনেক কৃষকের কাটা পাট ক্ষেতেই পড়ে রয়েছে। আশানুরুপ বৃষ্টি না হওয়ায় এবার চুয়াডাঙ্গার নিচু এলাকাগুলোও রয়েছে পানিশুন্য।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। লক্ষমাত্রা অতিক্রম করে আবাদ হয়েছে ১৫ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে। পাট চাষে লক্ষমাত্রা অতিক্রম করলেও এখন পাট কাটা মৌসুমে পানির অভাবে পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামের কৃষক মিলন বিশ্বাস জানান, পূর্ব পুরুষের আমল থেকে পাটের আবাদ করে আসছেন তিনি। পাটের আবাদ করে লোকসান হচ্ছে। তিনি বলেন, এলাকায় পাট জাগ দেয়ার জায়গার ভীষণ সংকট। এ সময়ে পুকুরেও পানি থাকে না। গত বছর পুকুরে পাট জাগ দিয়ে স্যালো মেশিন চালিয়ে প্রতিদিন পুকুরে পানি ভরতে হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ বেশি পড়েছে। ফলে গত বছর পাটের আবাদ করে লোকসান হয়েছে। এ বছর ২বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করে পাট বেশ ভাল হয়েছে। উৎপাদন ভাল হবে। তবে, পানির অভাবে পাট জাগ দিতে সমস্যা থাকায় মাঠ থেকে দূরে নদীতে পাট নিয়ে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ বেশি হয়ে যাবে।
একই গ্রামের কৃষক শিল্টু মন্ডল জানান, বৃষ্টি বেশি হলে সমস্যা ছিল না। সময়টা এমন যে, ধান এবং পাটের জন্য পানি দরকার। এই সময়ে বৃষ্টি হলে কৃষকের উপকার হয়। সে অবস্থা এবার নেই।
আলমডাঙ্গা উপজেলার খুদিয়াখালী গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন জানান, চুয়াডাঙ্গা অপেক্ষাকৃত উচু জেলা। এ জেলায় বন্যা হয় না। অতিবৃষ্টি হলে পাট জাগ দেওয়ার কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু এ বছর বৃষ্টিপাত হয়েছে খুবই কম। মাঠ-ঘাটে কোথাও পানি নেই। এ অবস্থায় পাট কাটার সময় হলেও,পাট জাগ দেওয়ার অসুবিধার কথা ভেবে পাট কাটতে পারছেন না।
চুয়াডাঙ্গা কৃর্ষি সম্প্রসারণ অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) সুফি মোঃ রফিকুজ্জামান বলেন, এ বছর লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে পাট চাষে। মাঠে পাটের অবস্থাও ভাল। এখন পাট কাটার সময় চলছে। কিন্তু বৃষ্টি নেই। মাঠ-ঘাটে পানিও নেই। কৃষক অপেক্ষায় আছে, বৃষ্টি হলে তারা পাট কাটা শুরু করবে। তবে, আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি, রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচালে অল্প খরচে পাট পচানো সম্ভব। এ পদ্ধতিতে পাটের মানও ভাল হয়।