২১ বছর পর বিজিবির ক্যাম্প, স্বস্তিতে সেন্টমার্টিনবাসী
৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৭:৫৪ | আপডেট: ৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৭:৫৬
কক্সবাজার: সরকারের নির্দেশনায় দীর্ঘ ২১ বছর পর সীমান্তবর্তী দ্বীপ সেন্টমার্টিনে দায়িত্ব পালন করছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণ সীমান্তবর্তী এই দ্বীপে বিজিবি ক্যাম্প স্থাপন করায় নিরাপত্তা আর স্বস্তিবোধ করছে সেন্টমার্টিনবাসী।
দ্বীপবাসীর আশা, বিজিবি ক্যাম্প স্থাপনের মধ্যদিয়ে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হবে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ, মানবপাচার, চোরাচালানসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দূর হবে। এছাড়া মিয়ানমার প্রায়শই দাবি করে সেন্টমার্টিন দ্বীপ তাদের অংশ। সীমান্তে বিজিবি ক্যাম্প স্থাপনের মাধ্যমে সেই বিভ্রান্তি দূর হবে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর সেন্টমার্টিন পরিদর্শনে আসেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম। দ্বীপ পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত সেন্টমার্টিন দ্বীপে বিজিবি (তৎকালীন বিডিআর) ক্যাম্প ছিল। সরকারের নির্দেশে ফের ক্যাম্প স্থাপন করা হচ্ছে। দ্বীপবাসীর নিরাপত্তার পাশাপাশি মাদকপাচার, মানবপাচার, চোরাচালান, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধসহ সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদার নিশ্চিত করা হচ্ছে। এ ছাড়া সেন্টমার্টিন দ্বীপে যে বিজিবির যে সংখ্যক সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন তা নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট।
সেন্টমার্টিনকে মিয়ানমার তাদের অংশ দাবি করার বিষয়ে বিজিবির মহাপরিচালক জানান, ভুল বা অজ্ঞতার কারণে তারা এটি বলে থাকে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সীমারেখা অনুযায়ী সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের অংশ। সেই বিষয়টি মাথায় নিয়ে বিজিবি সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করে যাবে।
আট কিলোমিটার দীর্ঘ সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রায় সাড়ে আট হাজার জনবসতি রয়েছে। শুরুর দিকে তাদের মূল পেশা মাছ শিকার হলেও বর্তমানে তারা যুক্ত রয়েছে পর্যটন শিল্পে। দ্বীপবাসীর নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেখানে এতদিন কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী এবং পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছে। ১৯৯৭ সালে ক্যাম্প গুটিয়ে নেওয়ার পর সেন্টমার্টিনে ফের বিজিবি ক্যাম্প স্থাপন করছে। এরইমধ্যে বিজিবি সদস্যরা ভারি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে টহল জোরদার রেখেছে।
বিজিবি‘র ক্যাম্প হওয়াতে নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি দ্বীপবাসী আনন্দিত। সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা ৬ নম্বার ওয়ার্ডের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর সালাম বলেন, ‘বিজিবি আসার পরে আমরা খুবই নিরাপত্তাবোধ করছি। এ জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।’
সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সেন্টমার্টিন সীমান্তবর্তী দ্বীপ হওয়ায় অনেক সময় আমাদের আতঙ্কে থাকতে হতো। বিজিবি ফের দায়িত্ব পালন করায় আমাদের সেই ভয় কেটে গেছে।’
মোহাম্মদ শাহজাহান নামে আরেক দ্বীপবাসী আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘সেন্টমার্টিনে বিজিবি ক্যাম্প হওয়ায় মাদকপাচার, মানবপাচার, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশসহ নানা সমস্যা দূর হবে। পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তাও আরও জোরদার হবে।’
ক্যাম্প স্থাপন বিষয়ে সেন্টমার্টিনের চেয়ারম্যান নুর আহম্মদ জানান, ১৯৯৭ সালে ২৭ ডিসেম্বর সেন্টমার্টিন থেকে বিজিবি প্রত্যাহার করা হয়। দীর্ঘ ২১ বছর পর বিজিবি এসেছে। এতে দ্বীপবাসী খুশি। বিজিবির সঙ্গে রয়েছে কোস্টগার্ড, নেভি ও পুলিশ। এতদিন কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী ও পুলিশ নিরাপত্তা দিলেও বিজিবি আসার পর সীমান্তের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার হলো।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সেন্টমার্টিন স্বস্তিতে সেন্টমার্টিনবাসী