Saturday 04 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সব FOOL বোকা নয়


২৪ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:১৮

বুদ্ধিমান মানুষ চট করে ধরে ফেলা সহজ নয়। তারা বলেন কম। ভুল করেন আরও কম। তাদের সব কিছুতেই যত গুপ্ত তত পোক্ত ব্যাপার। অন্যদিকে বোকারা যত ব্যাক্ত তত ত্যাক্তর দলে। সবকিছুতেই তাদের আগ বাড়িয়ে বাহাদুরি। দৌড়ে গিয়ে মলে পা দেওয়ায় তাদের জুড়ি মেলা ভার! অথচ বলতে গেলেই হইহই করে উঠবে। উল্টো শুনিয়ে দেবে- ‘আরে ভাই যেখানে দেখিবে ছাই… ওই ঘাঁটতে গিয়েই তো পায়ে জড়িয়ে গেল। দূর ছাই!’
বোকামির ফাঁদে বোকাদের ফর্দাফাই হামেশা এভাবেই ঘটে। অথচ ভাবখানা বুদ্ধির ঢেঁকি!
আজকাল দেখেশুনে বোকা চেনা যায় না। উল্টো বোকা বনে যাওয়ার আশঙ্কা। হাতে বালা কানে দুল হেঁটে যায় সাইদুল-এসব তো আছেই; এই নগরে মানুষকে বোকা বানানোর আয়োজনেরও কমতি নেই। লুঙ্গি মাঝখানে ছিঁড়ে সেলাই করে নিলেই ওটা প্লাজো। বিভিন্ন প্লাজাতে দিব্যি ঝুলছে। ছেলেদের প্যান্টও তাই। ঝুলছে কোমরের সঙ্গে বিরহ শঙ্কায়। কখন খুলে যায় খোদা মালুম! বলতে পারে না, নইলে শুনতে পেতেন সেও গাইছে- যেও না সাথী ওওও…।
পাঞ্জাবিও আজকাল লং, শর্ট। মিনি স্কার্টের সঙ্গে তার পাল্লা চলছে। ওদিকে পেল্লায় ভাব বাড়ছে জিন্সের। তিনি ছোটদের বড়দের সকলের, গরিবের নিঃস্বের ফকিরের। ছেঁড়া ফাটা হলেও ক্ষতি নেই। চোঙ্গা চ্যাপ্টাতেও কিছু যায় আসে না। ‘আসি’ বলে মুখ ফিরিয়ে নেবেন, পারবেন না। ছাড়ের ছড়াছড়ি। আশি পার্সেন্ট পর্যন্ত ছাড়! মৌমাছির মতো নেচে নেচে কিনতে যাবেন। থার্টি পার্সেন্টের বেশি মিলবে না। মনে হবে থাপ্পড়টা নিজের গালেই বুঝি পড়ল। বহুতল ভবন ঢেকে যাচ্ছে বিজ্ঞাপনে অথচ তলিয়ে না দেখলে ‘শর্ত প্রযোজ্য’ কথাটা চোখেই পড়বে না। তোরা সবাই বোকা তোদের এই বোকার রাজত্বে- ওরা সবাইকেই তাই ঠাওরায়।
সিটিং সার্ভিসে উঠে কত ভদ্রলোক স্যান্ডউইচ হয়ে গেল। উঠবেন কেতাদুরস্ত, যখন নামবেন কেতা তখন দূর অস্ত- নিজেকে গণধোলাই খাওয়া পকেটমারের মতো মনে হবে। চেহারা ঠিক যেন ন্যাশনাল আইডির ছবি। কী আর করা! এই শহরে এখন আর ‘অফিস টাইম’ বলে আলাদা কোনো ব্যাপার নেই। চব্বিশ ঘণ্টাই অফিস টাইম। অনলাইন ডিউটি। ডিজিটাল দুনিয়া। পাঠাও ডাকবেন? সেখানেও আছে মাল্টিপল চয়েসের হ্যাপা- অ্যাপসে যাবেন না আপসে?
স্যার পেমেন্ট কি ক্যাশে করবেন না বিকাশে? রিকশাওয়ালাদের সঙ্গে এদের পার্থক্য ওই ইংরেজিটুকুই।
কাঁচাবাজারে গিয়ে বাঙালির বোকা হওয়ার কথা উহ্য থাকুক। ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের কথা বলি। মহল্লার মনোহারি দোকানেও এখন খোলা- প্যাকেট দুটোই মেলে। বলিহারী পায়তারা! পেছনের কোনো গুদাম থেকেই খোলা ঢুকে যাচ্ছে প্যাকেটে। পুরো প্রক্রিয়াটাই গুহ্য, মাঝখান থেকে পকেট খালি, চাঁদি গরম। ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলো- জানি জানি, সেখানে মেজাজ চড়ানো যাবে না। তারাও শিখে গেছে বিনয়ের সদ্ব্যবহার। নয়-ছয় তাদের ধাতে নেই। আপনাকে কতটুকু বেকুব বানানো হবে সেখানে পণ্যের গায়েই লেখা থাকে। ফুড তো আর এ জামানায় ফাও মিলবে না। তাই বলে ডাবল দাম? আড়াইশ গ্রাম শুকনো মরিচেও ভ্যাট গুনতে হবে?
কী বলছেন স্যার! রুলস ব্রেক করা কি ঠিক হবে?
বটে! দেশসুদ্ধ বাসের ড্রাইভাররাই যখন জায়গামতো ব্রেক কষতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন আর কথা বাড়িয়ে লাভ কী?
স্যার, আমাদের কস্টিংটা কিন্তু দেখতে হবে। এসি, মেনটেনেন্স কস্ট এগুলো তো আমরা বলতে গেলে ধরিই না।
আপনার এবার চট করে মনে পড়বে ওষুধের দোকানগুলোর কথা। চাঁদিসুদ্ধ মেজাজ চটে উঠবে। ওষুধের চাইতে কচুর লতির ফ্রিজিং জরুরি। কে জানে? হতেও পারে- সব সম্ভবের দেশ বলে কথা!
স্যার, আমরা কিন্তু আলু পটল উচ্ছে ঝিঙ্গা সব কেটে দিচ্ছি।
এজন্য কি আমাকেও এখন কচুকাটা হতে হবে!
শেষ বাক্যটা উহ্য থাকে। ওটা করপোরেট বিহ্যাভিয়রে পড়ে না। গলা চড়িয়ে আনকালচার্ড হওয়ার চেয়ে চুপচাপ বেকুব বনে যাওয়াটাও অনেক সময় সম্মানের। সুতরাং আপনিই শুধু দ্বিধায় পড়ে রইবেন কেন? সব দেখেশুনে কেন বলবেন, ধরণী দ্বিধা হও!
এখন সময় স্রোতে গা ভাসানোর। যতটা পারুন ভেসে থাকুন। যদি না পারেন আপনার আগেপরে ‘বলদ’ শব্দটি জুড়ে দেওয়া হবে। ওই দেখুন, আবার অবলা প্রাণির নাম জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। বাংলা অভিধান বোকার সমার্থক আহাম্মক, নির্বোধ, বুদ্ধি কম শব্দগুলো জুড়ে দেওয়ার পর ওই পাঁঠা আর ছাগলের দিকেই আঙুল তুলছে। মানুষ একা আহাম্মক হতে রাজি নয়। তাই সে নিজেকে বুদ্ধিমান প্রমাণ করার সব আয়োজন চূড়ান্ত করে রেখেছে। মানুষ বলে- ছাগলে কি না খায়? এখন ছাগল যদি ব্যাঁ ব্যাঁ করতে করতে বলে বসে- জনাব, আপনিও তো স্থাবর অস্থাবর কোনো কিছুই বাদ দেন না, তখন?
বটে! এই খাওয়া, সেই খাওয়া এক হল? তোর তো দেখছি বুদ্ধিটাও গেছে।
সে-ও আপনাদের সঙ্গে থেকে থেকেই। চারপাশটা দেখে দেখেই।
মানে?
থাক্ আমি বলছি মানেটা। ঘাসের সঙ্গে কবে ও ‘রাজর্ষি’র দুইপাতা চিবিয়ে খেয়েছিল সেখান থেকেই জেনেছে। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন: ‘দিনরাত প্রখর বুদ্ধিমানের সঙ্গে থাকিলে বুদ্ধি লোপ পায়। ’
কবি লিখেই ক্ষান্ত হননি। বাঙালির বুদ্ধিতে অগাধ আস্থার কারণে দুলাইন ব্যাখ্যাও জুড়ে দিয়েছেন- ‘ছুরিতে অবিশ্রাম শান পড়িলে ছুরি ক্রমেই সূক্ষ্ম হইয়া অন্তর্ধান করে, একটি মোটা বাট কেবল অবশিষ্ট থাকে।’
সুতরাং গাধাকে যখন-তখন ‘গাধা’ বলবেন না। ওর গাধামির দায় আমার আপনার সকলের।
এবার যা বলছিলাম- বুদ্ধিমান লোককেও অনেক সময় বোকা বনে যেতে হয়। বিশ্বাস হচ্ছে না? যে শরৎচন্দ্র ‘শ্রীকান্ত’তে বলছেন, ‘অকপটসহজ বুদ্ধিই সংসারে পরম এবং চরম বুদ্ধি। ইহার উপরে তো কেহই নাই। ’ সেই শরৎচন্দ্রকেও আমরা সংসারে একবার উপস্থিত কারণ বুঝতে না পেরে অকপটে বোকা বনে যেতে দেখেছি।
শরৎচন্দ্র একবার পাটনা গেলেন। স্থানীয় সাহিত্যরসিকেরা উপলক্ষ্য পেল। তারা সাহিত্য সভার আয়োজন করল। সেখানে তাকে কিছু বলতে হবে। শরৎচন্দ্র পড়লেন মহাসমস্যায়। প্রথমত তিনি হিন্দিতে পটু নন। বাকপটু তো নন-ই। দ্বিতীয়ত ঠান্ডায় স্বরও বসে গেছে। তারপরও সকলের অনুরোধে তিনি বক্তৃতার জন্য উঠে দাঁড়ালেন। কোনোমতে গলা পরিষ্কার করে বিব্রত কণ্ঠে বললেন, হামারা গর্দান বৈঠা গিয়া!
শুনে শ্রোতারা মুখ টিপে হাসতে লাগল। শরৎচন্দ্র অনেক চিন্তা করেও হাসির কারণ নির্ণয় করতে পারলেন না।
এমন হয়। হতেই পারে। ভাষাবিদরা এমন বোকামির বর্ম অনেক আগেই তৈরি করে রেখেছেন আমাদেরই জন্য; নাম দিয়েছেন ‘স্লিপ অফ টাং’। আর ওই টঙ্কে যিনি বসে আছেন, তার সঙ্গে টক্কর তো সম্ভব নয়। তার ওপর অন্তর্যামি। তিনি তারও আগে জাল ফেলে ব্যবস্থা করে রেখেছেন এই বলে যে, বাছাধন, গুলো আর বুলি একবার বেরিয়ে গেলে অটো। ও আর ফিরিয়ে নেওয়া যাবে না- কদাপি নহে।
বোকা আর বোকামি দুই বস্তু। দুটোরই রকমফের আছে। ছাগল যদি বোকা হয়, তবে রামছাগল হল বোকার শিরোমণি। অর্থাৎ বোকা শ্রেষ্ঠ। মানুষের ক্ষেত্রে শব্দটা হতে পারে ‘বোকাচন্ডী’। কিন্তু বোকাশ্রেষ্ঠকে তো এভাবে ডাকলে খেদ মিটবে না। তাকে ডাকতে হবে তিরিক্ষি মেজাজে ‘ভোদাই’ বলে। ‘ভোদাইব্যাটা’, বা ‘ভোদাইমার্কা’ও বলতে পারেন। তাতে মার্কাটা অন্তত চরিত্রের সঙ্গে সেঁটে দেওয়া যায়। আর কে না জানে অন্যকে বোকা বানানোর অর্থই হল নিজেকে বুদ্ধিমান প্রমাণ করা। এর আনন্দই অন্যরকম! তবে হ্যাঁ, অনেক জ্ঞানী, বিদ্বৎজনও যে জীবনে বোকার মতো কাজ করেননি তা নয়। যৎকিঞ্চিৎ পেশ করছি-
বিজ্ঞানী নিউটনের গবেষণাগারের দরজার ভাঙা অংশ দিয়ে একটি বিড়াল প্রায়ই যাতায়াত করত। এক সময় বিড়ালটি বাচ্চা দিল। ফুটফুটে বাচ্চা! নিউটন খুব খুশি হলেন। বাচ্চাটি যাতে অনায়াসে গবেষণাগারে ঢুকতে পারে এ জন্য তিনি একটি উপায় বের করলেন। মা বিড়াল দরোজার ভাঙা যে অংশ দিয়ে ঘরে ঢুকত তার পাশে ছোট্ট আরেকটি দরোজা করে দিলেন।
বড় দরোজা দিয়ে মা বিড়ালের সঙ্গে ছানাটিও যে ঢুকতে পারবে নিউটনের মাথাতেই আসেনি। ভাবা যায়! অথচ ওই মাথা খাটিয়েই তিনি কত কিছু আবিষ্কার করেছেন। এবার মায়ের কাছ থেকে জুটল তিরস্কার।
অনেক বুদ্ধিমানও বিপদে টলে ওঠেন। জ্বলে ওঠার বদলে বোকামির কারণে সমস্ত অর্জন জলে দেন। জলাঞ্জলিই বলা যায়। প্রেমে পড়লেও তাই। পড়াটা হয়, অনেক সময় ওঠা আর হয়ে ওঠে না। ফলাফল ছ্যাকা খেয়ে একা। দোকলা হতে পারলেই যে উদ্বাহু নৃত্যে বলবেন, আমি পাইলাম উহাকে পাইলাম- তার গ্যারান্টি নেই। কারণ পেয়ে ধরে রাখাটা নির্ভর করে বুদ্ধিমত্তার ওপর। আর কে না জানে, ভালোবাসার মানুষের সামনে গেলেই বুদ্ধি গুলোয়ে যায় সবচেয়ে বেশি।
শিবনাথ শাস্ত্রী। বিরাট পণ্ডিত, সমাজ সংস্কারক। ভয়-ডর কোনোকালেই পেতেন না। অথচ বিয়ের আসরে কি জব্দটাই না হলেন। তিনি লিখেছেন:
‘আমার স্পষ্ট মনে আছে- কানে মাকড়ি, গলায় হার, হাতে বাজু ও বালা পড়ে বিয়ে করতে গিয়েছিলাম। কনের বাড়ি গিয়ে লজ্জা ভুলে আমাকে নিয়ে সবার রসিকতার জবাব দিতে লাগলাম। তারা আমাকে জব্দ করবে কি উল্টো আমিই তাদের ঠকিয়ে দিলাম! কিন্তু সমস্যায় পরলাম বাড়ির মধ্যে নিয়ে যাওয়ার পর। এবার সমবয়স্কা বালিকাদের গুঁতো, কানমলা আরম্ভ হল। তখন লজ্জায় আমার মুখ দিয়ে আর কথা বের হয় না। একসঙ্গে এত মেয়ে দেখে সেদিন একেবারে বোকা বনে গিয়েছিলাম।’
দেখা যাচ্ছে কবিগুরুরও বিয়ের রাতে সবকিছু ওলটপালট হয়ে যাচ্ছিল। ১২৯০ সনের ২৪শে অগ্রহায়ণ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিয়ের আসরে বসেই দুষ্টুমি করতে লাগলেন। ভাঁড় খেলার সময় ভাঁড়গুলো উপুড় করে দিতে লাগলেন। তাই দেখে ত্রিপুরাসুন্দরী দেবী বলে উঠলেন, ‘ও কি করিস রবি? ভাঁড়গুলো সব উলটেপালটে দিচ্ছিস কেন?’
রবীন্দ্রনাথ বললেন, ‘জানো না কাকিমা, সব যে ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে।’
বিয়ের আসরে বর-কনেকে বোকা বানানোর এই প্রয়াস আনন্দের অংশ। কিন্তু জীবন চলার পথে ঠকে যেতে কেউ রাজি নয়। তাই এত সতর্কতা। অতি চালাকের গলায় দড়ি জেনেও মানুষ শেষ পর্যন্ত চালাক হতে চায়। অথচ বুদ্ধিমান হওয়ার প্রথম শর্ত জ্ঞান। জ্ঞানার্জনে বাঙালির মনোভাব ফাঁকিবাজ সেই ছাত্রের মতো। যে সব সময় পরীক্ষায় ফার্স্ট হতে চায়, যাতে অন্তত সে পাস করতে পারে। বাঙালিও তাই। জ্ঞানার্জন না হোক, চালাক-চতুর হতে পারলে জীবনের বাকি অর্জনকে সে থোরাই কেয়ার করে। তাই সে জীবনভর দুয়ে দুয়ে ছয় মেলানোর চেষ্টায় থাকে। আইনস্টাইনের এই গল্পটি তার জন্য মস্ত এক অনুপ্রেরণা।
আইনস্টাইনের এক সহকর্মী একদিন টেলিফোন নাম্বার চাইলেন। আইনস্টাইন তখন টেলিফোন গাইডে নিজের ফোন নাম্বার খুঁজতে শুরু করলেন। এদিকে সময় নষ্ট হচ্ছে দেখে সহকর্মী বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘তুমি টেলিফোন নাম্বারটাও মনে রাখতে পারো না?’
আইনস্টাইন বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টাতে উল্টাতে বললেন, ‘বোকার মতো কথা বলো না!’
‘মানে?’
‘যে জিনিস বইয়ে লেখা আছে, সেটা আমি মুখস্থ করতে যাব কেন?’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবিডিই

ঈদুল ফিতর সংখ্যা ২০২৩ তাপস রায় তাপস রায়ের রম্যগল্প 'সব FOOL বোকা নয়' রম্যগল্প সব FOOL বোকা নয় সাহিত্য

বিজ্ঞাপন

না ফেরার দেশে অঞ্জনা
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৫৪

এই তাসকিনকে সমীহ করবেন যে কেউ
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৪৭

আরো

সম্পর্কিত খবর