Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কোভিড-১৯: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা মেনে চলা জরুরি


২৩ মার্চ ২০২০ ১১:১৭ | আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২০ ১১:১৯

শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারাবিশ্বেই করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ নিয়ে নানারকম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, অনলাইন পোর্টাল, ট্যাবলয়েডের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে এসব ভ্রান্তিমূলক তথ্য। একটি বৈশ্বিক মহামারি যখন ঘটে, তার প্রভাব শুধু শারীরিকভাবেই নয়, মানসিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবেও পড়ে।

বৈশ্বিক মহামারির কারণে উদ্বিগ্ন হয়ে কেউ কেউ, নিজের উদ্বিগ্নতা কমাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানারকম বিভ্রান্তিকর পোস্ট দেন। এটি এক ধরনের ম্যালঅ্যাডাপ্টিভ ডিফেন্স মেকানিজম।

বিজ্ঞাপন

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বুঝে না বুঝে যেসব পোস্ট দেওয়া হচ্ছে বা শেয়ার করা হচ্ছে তার ফলাফল কিন্তু অনেকসময় দারুণ বিপদজনক হয়ে যায় । মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। এর ফলে যারা এসব পোস্ট দেখছেন তাদের জন্য সত্য মিথ্যা যাচাইবাছাই না করেই আতঙ্কিত হওয়ার প্রবণতা তৈরি হচ্ছে। এর থেকে বের হওয়ার জন্য আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে।

এসব পোস্ট যারা দেখছেন তাদের করণীয়
১. বিশ্বস্ত ও সমর্থিত সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য গ্রহণ করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, স্বাস্থ্য অধিদফতর, আইইডিসিআর ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের তথ্যে আস্থা রাখুন।

২. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তথ্যের উপর নির্ভর করবেন না। অসমর্থিত সূত্রের তথ্য যথাসম্ভব এড়িয়ে চলবেন।

৩. অনেকসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়া অনেক সংবাদ আমরা পড়েই বুঝতে পারি যে সেটি ঠিক নয়। অথবা শুধুই মজা করার জন্য দেওয়া হয়েছে। এমন গুরুতর সময়ে এসব ফান পোস্ট বা মিথ্যা বিষয় ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন।

৪. নিত্যদিনের জীবনে কোভিড-১৯ এর আতঙ্কে মানসিক চাপ আসা স্বাভাবিক। তাই বলে সারাক্ষণ কোভিড-১৯ নিয়ে ব্যস্ত থাকা যাবে না। স্বাভাবিক অন্যান্য কাজগুলো করার চেষ্টা করুন। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যস্ত থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পরিশীলিত ‘সামাজিক ব্যবহার’ করুন। অর্থাৎ, মিথ্যা সংবাদ দেখা আর প্রচার করা থেকে বিরত থাকুন।

বিজ্ঞাপন

৫. নিয়মিত বই পড়া, টিভি দেখা, সংবাদ দেখা, মুভি দেখার মত কাজ করতে হবে। সারাক্ষণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করবেন না।

যারা জেনে বুঝে বা না বুঝে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছেন তারা কী করবেন
এদিকে যারা করোনাভাইরাস ও কোভিড-১৯ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন তাদের সতর্ক হতেই হবে—

১. প্রতিনিয়ত এসব নিয়ে পোস্ট দিয়ে বা মেসেজ করে আপনি যে আতঙ্কিত সেটি প্রমাণ করছেন। একইসঙ্গে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন। এটি সমাজের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

২. যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন তাদের ভুলে গেলে চলবে না, এসব কারণে তাদের আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যৌক্তিক ও উপযুক্ত ব্যবহার করুন।

৩. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেন আপনার জীবনের একমাত্র উপজীব্য না হয়ে ওঠে সেই বিষয়ে সচেতন থাকুন।

হোম কোয়ারেন্টেইনের সময় কী করবেন
যদি কারো হোম কোয়ারেন্টেইনে থাকতেই হয় তবে তারা কীভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করবেন—

১. নিজেদের তো অবশ্যই আলাদা করে রাখবেন। সেই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন ধরণের পোস্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। মনে রাখবেন, এই পরিস্থিতি সাময়িক। এই অবস্থা একদিন নিশ্চয়ই কেটে যাবে।
২. নিজেকে বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হিসেবে ভাববেন না। এমন তথ্য প্রচারও করবেন না। অযথা কাউকে দায়ী করবেন না। মনে সাহস রাখুন।
৩. রোগ বিষয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায় এমন তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকুন।
৪. সময় টাকে ইতিবাচক কাজে লাগান। বই পড়ুন।
এবং অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

লেখক- সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট

করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ কোভিড-১৯ ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর