Thursday 16 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চন্দ্রা-স্বপনের ছবির মতো সাজানো বাড়ি


২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ১০:০০ | আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৮:২০

হাতিশালে হাতি আর ঘোড়াশালে ঘোড়া— রাজ পরিবারের এমন গল্প কে শোনেনি! আর গল্প যদি কখনও বাস্তবতার সঙ্গে মিলে যায় তাহলে আশ্চর্য না হয়ে উপায় আছে?

সাবীহা হক চন্দ্রা ও মজিবুর রহমান স্বপন দম্পতির বাসাও গল্পের মতোই আকর্ষণীয়, ছবির চেয়েও সুন্দর। ছিমছাম সাজানো বাসাটি দেখেই তাদের রুচির পরিচয় পাওয়া যায়। দেশ-বিদেশ ঘুরে অসংখ্য শোপিস সংগ্রহ করেছেন তারা। বাসার আনাচে-কানাচে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা সেগুলো।

বিজ্ঞাপন

তবে মূল আকর্ষণ কিন্তু অন্যজায়গায়। চন্দ্রা-স্বপন দম্পতির বাসাজুড়ে অন্তত ৯০ রকমের হাতির শোপিস। নানা উপকরণে তৈরি এসব শোপিস বাসাজুড়ে নান্দনিকতার যে পরশ বুলিয়েছে তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না!

সাজানো বাড়ি

ছোটবেলা থেকেই হাতি, পাখি, ব্যাঙ- এই প্রাণীদের প্রতি ভীষণ টান অনুভব করেন গৃহকর্তা মজিবুর রহমান স্বপন। একটা সময় হাতির শোপিস সংগ্রহের আগ্রহ তৈরি হয় তার। সাড়া দেন সহধর্মীনি সাবীহা হক। দুজন মিলে অত্যন্ত যত্ন নিয়ে পুরো বাসা জুড়ে সাজিয়েছেন সেসব শোপিস। হাতির শোপিস সংগ্রহের প্রতি আগ্রহ জন্মানোর কারণ জানতে চাইলে গৃহকর্তা বললেন, ‘ছোটবেলা থেকেই হাতি ভালো লাগে। মনে হয়, জলজ্যান্ত হাতির বাচ্চা যদি পুষতে পারতাম! বাস্তবতার কারণে যেহেতু তা সম্ভব হচ্ছে না তাই হাতির শোপিস সংগ্রহ করতে ভালোলাগে।’

সাজানো বাড়ি

ছেলেবেলার স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে নানা প্রজাতির ব্যাঙ ধরার গল্পও শোনালেন তিনি। সেই অল্প বয়সেই এদেশের ব্যাঙের সকল প্রজাতি সম্পর্কে ধারণা জন্মে তার। ব্যাঙের ডাক খুব প্রিয়। তাই গ্রামে গেলেই কান পেতে রাখেন কোথাও থেকে ব্যাঙের ডাক আসছে কিনা।

প্রাণ আর প্রকৃতির ওপর অসম্ভব টান থেকে প্রকৃতির সান্নিধ্যে দিন কাটাতে ভালোবাসেন তারা। তাই সময় পেলেই ইট আর কংক্রিটের এই শহর ছেড়ে ঘুরতে বেড়িয়ে পড়েন।

বিজ্ঞাপন

সাজানো বাড়ি

প্রকৃতিকে যারা ভালোবাসেন, তাদের সবকিছুই হয় প্রকৃতিকেন্দ্রিক। গৃহকর্তা স্বপনের সঙ্গে গল্প করতে করতে কথাটি আবারও মনে পড়ে যায়। পাখি তার দারুণ পছন্দ। ঢাকার অদূরে পুবাইলে একটি রিসোর্ট তৈরি করছেন। সেখানে ছোট আকারের কলা ধরে এমন এক প্রজাতির কলাগাছ লাগিয়েছেন। এগুলো শুধুই পাখিদের খাওয়ার জন্য। স্বপন বলেন, ‘এই জায়গাটি পাখির জোন করতে চাইছি। বিল্ডিং নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। কেবল প্রকৃতির নিজস্ব সৌন্দর্য ধরে রাখতে চাই।’

সাজানো বাড়ি

এই বাসার গৃহকর্ত্রী চন্দ্রা দারুণ পরিপাটি করে সাজিয়েছেন বাসার প্রতিটি কোণ। সবকিছুতেই অসম্ভব যত্নের ছোঁয়া। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই নিজের ঘর গুছিয়ে রাখতে পছন্দ করি। যখন ভাড়া বাসায় থাকতাম তখনও মনের মতো করে বাসা গুছিয়ে রাখতাম। আমি মনে করি, বাসা সাজানোর শখ যাদের থাকে, তারা ভাড়া হোক কী নিজের, সব বাসাই সাজাতে পারেন। আর বাসা যত ছোটই হোক, পরিচ্ছন্ন আর গোছানো থাকলে সব বাসাই দেখতে ভালো লাগে। সেই সঙ্গে মেলে স্বস্তি।’

সাজানো বাড়ি

সাবীহা হকের ভালোলাগে বিভিন্ন ডিজাইনের মোম সংগ্রহ করতে। কোথাও ঘুরতে গেলে নানারকম মোম সংগ্রহ করেন। এছাড়া নানা ধরনের শোপিস সংগ্রহের নেশা সবসময়ই ছিল, জানালেন তিনি। এত শোপিস কিনেছেন যে অনেকসময় সেগুলো সাজিয়ে রাখার জায়গা হয় না। তখন কিছু শোপিস তুলে রাখেন। বাসায় অতিথি এলে আবার সেগুলো সাজিয়ে রাখেন। এই বাসায় দেখলাম অনিন্দ্যসুন্দর এক শোপিস। রাশিয়া থেকে আনা এই শোপিসের নাম মাতুস্কা অর্থাৎ মায়ের সঙ্গে বাচ্চা। সাবীহার অত্যন্ত পছন্দের শোপিস এটি।

একটি কথা না বললেই নয়, একটি বাসায় এতো শোপিস দেখলে চোখের ক্লান্তি আসার কথা। কিন্তু এই বাসায় সেটি হওয়ার সুযোগ রাখেননি চন্দ্রা। গৃহকর্ত্রীর সুনিপুন হাতের দক্ষতায় শোপিসগুলো ঘরের শোভা বাড়িয়েছে।

সাজানো বাড়ি

আগেই বলেছি, চন্দ্রা-স্বপন দম্পতির বাসার প্রত্যেকটি পরতে পরতে রুচিশীলতার ছাপ পাওয়া যায়। বিখ্যাত শিল্পীদের আঁকা ছবি তাতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। সাবীহা হক বই পড়তে ভালোবাসেন। বইমেলায় গেলে পাগলের মতো বই কেনেন। ঘরের এক কোণে সাজিয়ে রেখেছেন তার সংগ্রহ করা বইগুলো।

শোবার ঘরটিও বেশ স্নিগ্ধ। শোবার ঘরে ছড়িয়ে থাকা এই দম্পতির ছবিগুলো অন্যরকম মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। এককটি ছবির পেছনে একেকরকম গল্প, জানালেন গৃহকর্ত্রী। ড্রেসিনটেবিলে সাজিয়ে রাখা এমনই একটি ছবির গল্প শুনলাম। কাশফুলের মধ্যে দাঁড়িয়ে তোলা সাবীহা হকের অসম্ভব সুন্দর একটি ছবি। জানতে পারলাম, এই ছবির জন্য তিনি একটি প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরষ্কার পান।

সাজানো বাড়ি

মানুষ তার নিজস্বতা দিয়েই অনন্য হয়। নিজস্ব ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি, ভালোলাগা, মানবিকতা, প্রেম সবকিছুই অনন্যতায় একেকটি মাত্রা যোগ করে। চন্দ্রা-স্বপন দম্পতিও তাদের ‘নিজস্বতা’ দিয়ে হয়ে উঠেছেন অনন্য। যার ছাপ রেখেছেন জীবনের প্রতিটি পাতায়।

https://youtu.be/BMREHXiHnSs

বিজ্ঞাপন

এবারের বাজুস ফেয়ার স্থগিত
১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৪৬

আরো

সম্পর্কিত খবর