Monday 20 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সেইন্ট লুসিয়া ডেঃ আলোর উৎসবে ক্রিসমাসের আগমনী


২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৪:৩৪ | আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৪:৩৮

বিশ্বের নানা প্রান্তে কত উৎসবই না উদযাপিত হয়। উৎসবগুলোর মাঝে বড়দিন বা ক্রিসমাস অন্যতম। বিশ্বের নানা প্রান্তে মানুষ নানাভাবে ক্রিসমাস উদযাপন করে। আমাদের দেশে যেমন রোজা থেকেই ঈদের আবহ শুরু হয়ে যায়, সুইডেনেও তেমনি ক্রিসমাসের আবহ শুরু হয়ে যায় ডিসেম্বরের ১৩ তারিখ থেকেই। এদিন সুইডিস নাগরিকেরা সেইন্ট লুসিয়া ডে উদযাপন করে। সেইন্ট লুসিয়া উদযাপন কীভাবে শুরু হল তা জানতে আমাদের ফিরে যেতে হবে অতীতে।

বিজ্ঞাপন

সেইন্ট লুসিয়া একজন অল্প বয়সী মেয়ে, খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহন করার জন্য যাকে মেরে ফেলা হয়। কথিত আছে, লুসিয়া রোমে লুকিয়ে থাকা নির্যাতিত খ্রিস্টানদের জন্য রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে খাবার নিয়ে যেত। বুদ্ধিমতি লুসিয়া দুই হাত ভর্তি করে খাবার নিতে মাথায় পরে নিত একটা জ্বলন্ত মোমবাতি।

অন্যদিকে ডিসেম্বরের তের তারিখে নিরক্ষরেখা থেকে সবচাইতে দূরে অবস্থান করে সূর্য। ডিসেম্বরের শীতের এই দিনটির দৈর্ঘ্য থাকে তাই সবচাইতে কম। পুরনো জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এইদিন সুইডিসরা ফেস্টিভ্যাল অফ লাইট নামক উৎসব আয়োজন করে থাকে। যা পরবর্তীতে সেইন্ট লুসিয়া ডে নামে উদযাপিত হয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে লুসি শব্দের অর্থও ‘আলো’।

ঐতিহ্য অনুযায়ী সেইন্ট লুসিয়া ডে তে একজন মেয়ে সাদা জামা পরে কোমরে জড়ায় একটা লাল রঙের স্যাশে। তার মাথার মুকুটে থাকে একাধিক প্রজ্জ্বলিত মোমবাতি। এই উৎসবে ছেলেরাও থাকে ‘স্টার বয়েজ’ হিসেবে যাদের মাথায় থাকে চোঙা আকৃতির টুপি। আর মেয়েরা থাকে ‘টারনর’ হিসেবে যাদের কাছে মাথায় থাকার বদলে হাতে মোমবাতি থাকে।

ঢাকায় অবস্থিত সুইডিস দূতাবাস বরাবরের মত এবারও সেইন্ট লুসিয়া ডে উদযাপন করেছে। এই উপলক্ষে আমারি ঢাকার এক্সিকিউটিভ শেফ টমাস কেসকিটালো আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য বিশেষ সুইডিস খাবার পরিবেশন করেন। জাতিতে সুইডিস টমাস সুইডিস দূতাবাসের কর্মকর্তা, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য নিজের দেশের খাবার প্রস্তুত করতে পেরে খুবই খুশি। এইদিন সুইডেনের ঐতিহ্যবাহী ‘লুসেক্যাটস’ নামক জাফরান ও কিশমিশ দেওয়া বিশেষ রুটিসহ নানা ধরণের সুইডিস খাবার অতিথিদের পরিবেশন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

খাবার হাতে শেফ টমাস

স্থানীয় দুতাবাস কর্মকর্তারা ছাড়াও সুইডেন থেকেও অনেকে এসেছিলেন সেইন্ট লুসিয়া ডে উদযাপন করতে। আয়োজন করা হয়েছিল যে ছাদে সেটি আলোর উৎসবের ঐতিহ্য বজায় রেখে ছিল আলোয় আলোকিত। একধারে একটা ছোট্ট মঞ্চ। এক অন্য প্রান্তে থাকা পর্যায়ে ছাদের সিঁড়ি থেকে মোমবাতি হাতে সাদা পোশাকের একদল সুইডিস ‘শান্তা লুসিয়া’ গান গাইতে গাইতে আসতে থাকে ছাদের অন্য প্রান্তের মঞ্চের দিকে। মাঝখানে থাকা মেয়েটির মাথায় মোমবাতির মুকুট আর কোমরে লাল স্যাশে। মঞ্চে উঠে একের পর এক সেইন্ট লুসিয়া ডে’র বিশেষ সুইডিস গান গাইতে থাকে দলটি।

গানে, সুস্বাদু খাবারে আর সুন্দর আয়োজনে শেষ হয় ক্রিসমাসের আগমনী ঘোষণা করা এই উৎসবমুখর আয়োজন।

ছবিঃ মেহেদী হাসান

সারাবাংলা/আরএফ

ঐতিহ্যবাহী সুইডিস খাবার ক্রিসমাস সুইডিস উৎসব সেইন্ট লুসিয়া ডে