ডায়িং ওয়েল: মৃতবেশে বন্ধ কফিনে দশ মিনিট
৬ নভেম্বর ২০১৯ ১২:২৫ | আপডেট: ৬ নভেম্বর ২০১৯ ১২:৪০
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে ২০১২ সাল থেকে ঘটে আসছে এই অভাবনীয় ঘটনা। জীবন্ত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া।ইতোমধ্যেই প্রায় ২৫ হাজার মানুষ এই জীবন্ত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন। আর এই আয়োজনটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা হয়। জীবিতদের মধ্যে যারা মৃত্যুর পর মৃত মানুষের কেমন লাগে? তা কিছুটা হলেও অনুভব করতে চান, তারা এসে এখানে নাম লেখান। কোরিয়ার হাইওউন হিলিং সেন্টার সাধারণ কোরিয়দের জন্য এই আয়োজন করে থাকে।তারা এই আয়োজনের নাম দিয়েছে ‘ডায়িং ওয়েল’।
ডায়িং ওয়েলে অংশ নিয়ে আপনাকে মৃতবেশে কফিনে শুয়ে থাকতে হবে দশ মিনিট।তার আগে আপনার শেষযাত্রার ছবি তোলা হবে। আপনার যদি কোন শেষ ইচ্ছা থেকে থাকে তাহলে তাও লিপিবদ্ধ করে যেতে পারবেন।তরুণ থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত যে কেউ এই আয়োজনে অংশ নিতে পারবেন।
সম্প্রতি ডায়িং ওয়েলে অংশ নেওয়া একজন ৭৫ বছর বয়সী নারী চো যাই হি জানিয়েছেন,সচেতনভাবে একবার মরে যাওয়ার পর আবার যখন আপনি সাধারণ জীবন শুরু করবেন তখন আপনার জীবনে এক নতুন প্রেরণা আসবে, যা আপনি ভাবতেও পারবেন না।
আরেকজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র এই ডায়িং ওয়েলে অংশ নিয়ে জানিয়েছেন,কফিনের ভেতরে দশ মিনিট থেকে তিনি বুঝতে পেরেছেন সবার সাথে তিনি যে প্রতিযোগিতাপ্রবণ আচরণ করেন, তাতে সমস্যা। তার এই আচরণ পরিবর্তন করা দরকার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৬ সালের এক হিসাব অনুযায়ী দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি এক হাজার জনে ২১ জন আত্মহত্যা করতেন। এছারাও ৪০ সুখী দেশের তালিকায় দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান ছিল ৩৩ এ। কোরিয়ার তরুণেরা জীবন ও কাজের ব্যাপারে উচ্চাভিলাষী হয়ে পড়ার পর, তারা যখন বেকারত্বের মুখোমুখি হন তখন হতাশা আরও বেড়ে যায়।
এরকম হতাশা থেকে নাগরিকদের বের করে আনতেই দক্ষিণ কোরিয়ায় এ ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে এই আয়োজনের উদ্যোক্তরা।