Wednesday 01 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তবুও শাড়িই পরি…


৩১ আগস্ট ২০১৯ ১৬:০৩ | আপডেট: ৩১ আগস্ট ২০১৯ ১৯:২০

শাড়ি আমার ভীষণ প্রিয়। কতটা প্রিয়, তা আমার কাছের মানুষেরা জানেন। টরন্টোর ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রায়, এক হাঁটু বরফের মধ্যেও আমি শাড়ি পরে বের হই। এখনও সপ্তাহের বাজার করতে যাওয়ার সময় জিন্সের চেয়ে শাড়িতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। তাই শাড়ি নিয়ে লেখাটা খুব আগ্রহ নিয়েই পড়তে শুরু করেছিলাম। তার উপর লেখক যখন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, আগ্রহের মাত্রাও স্বাভাবিকভাবেই ছিল বেশি।

লেখাটা পড়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আমার শ্রদ্ধার মানুষ ছিলেন তিনি। লেখাটা প্রথমবারে পুরোটা পড়তে পারিনি – রুচি হয়নি। পরে অনেকটা জোর করেই পড়েছি। সমাজের একজন প্রথিতযশা মানুষ বাঙালি মেয়েদের আর কতো অসম্মান করতে পারেন সেটা জানার জন্য। জেনে রাখা ভালো সমাজের একজন সুধীজন বাঙালি মেয়েদের কতোটা বৈষম্যের দৃষ্টিতে দেখেন।

বিজ্ঞাপন

ক্লাস সেভেন কি এইটে যখন পড়ি, তখন থেকেই সুযোগ পেলে শাড়ি পরি। ভালো লাগা থেকেই পরা। এখনও শাড়ি পরতে ভালো লাগে আমার। কিন্তু কোনদিন শরীর দেখানোর জন্য শাড়ি পরিনি। সারাদিন ছুটোছুটির ফাঁকে যখন নামাজের সময় হয়েছে, তখন শাড়ির আঁচলই ছিলো ভরসা!

শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কফিশপে যখন আমার ৪ বছরের ভাগ্নি ঠাণ্ডায় কেঁপে উঠেছে, তখনও শাড়ির আঁচলেই তাকে জড়িয়েছি। কানাডা এসেও শাড়ি পরে ক্লাস করেছি। আমার চিরায়ত বাঙালি চেহারা, শ্যাম বর্ণ আর স্বল্প উচ্চতার খুঁত ঢাকতে পরিনি। পরিনি লাস্যময়ী হতেও। শাড়ি পরেছি কারণ, শাড়ি পরতে চেয়েছি।

কারও চেহারা বা গায়ের রঙ নিয়ে মন্তব্য করা অশোভন। এধরণের মন্তব্য বৈষম্যের জন্ম দেয় অথবা সমাজের প্রচলিত বৈষম্যেগুলোকে আরো প্রতিষ্ঠিত করে। একজন মানুষ,মেয়ে হোক বা ছেলে, সে কি পোষাক পরবে, এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। এ নিয়ে মন্তব্য করাটাও অশোভন। রীতিমতো ব্যক্তি স্বাধীনতার সীমা-লঙ্ঘন। এটা যদি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের মতো মানুষ না বোঝেন, তাহলে সমাজের সাধারণ মানুষকে কে বোঝাবে?

বিজ্ঞাপন

ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করেন, এমন অনেক মানুষের কাছ থেকে শাড়ি নিয়ে অনেক অপ্রিয় কথা শুনেছি। কখনো তার জবাব দিয়েছি, কখনো অগ্রাহ্য করে প্রিয় টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়িটা গায়ে জড়িয়েছি। আজ মনে হচ্ছে, সমাজের তথাকথিত মুক্তমনা মানুষের লোলুপ দৃষ্টি থেকে বাঁচতেই শাড়ির উপর বোরখা পড়তে হবে। ধর্মান্ধ মানুষরা যা করতে পারেননি, এই ‘সুধীজন’দের লোলুপ দৃষ্টি আর বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি তা করিয়েই ছাড়বে।

‘শাড়ি’ লেখাটা পড়ে কোন মেয়ে যদি শাড়ির প্রতি বিরূপ হয়, তাকে আমি অন্তত কোন দোষ দিতে পারবো না।

টপ নিউজ শাড়ি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর