Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইরফান খানের উপলদ্ধি


১৯ জুন ২০১৮ ১৭:০৩ | আপডেট: ১৯ জুন ২০১৮ ১৮:৪৫

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক ।।

ক্যান্সারে আক্রান্ত বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ইরফান খান। তার রোগের নাম নিউরো এন্ডোক্রাইন। তার এই অসুস্থতার কথা টুইটারে নিজেই জানিয়েছিলেন সবাইকে। বেশ কয়েক মাস ধরেই লন্ডনের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই অভিনেতা। পরিবারের মানুষছাড়া তেমন কারো সঙ্গে যোগাযোগও নেই তার।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে অসুস্থ ইরফান জীবনকে চিনছেন নতুন করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে জীবনকে আবিষ্কার করছেন তিনি। আর এইসব অনুভূতির কথা তিনি জানিয়েছেন ভারতীয় সাংবাদিক অনশুল চতুর্বেদীকে। সেই কথাগুলোই সাক্ষাৎকার আকারে প্রকাশিত হয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমে।

ইরফান খানের কথাগুলো ছিল এমন-

‘অনেকদিন ধরেই ক্যান্সারে আক্রান্ত আমি। হসপিটালে আসার পর জানলাম এই রোগের নাম নিউরো এন্ডোক্রাইন। এই শব্দ আমি প্রথম জানলাম। এও জানতে পারলাম যে রোগটা বিরল প্রকৃতির, এর নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। কি আর করা, এক অনিশ্চিত জীবন সীমানায় আটকে যাওয়ার মতো সময় কাটিয়েছি। মনে হয়েছে জীবনের ট্রায়াল এরর খেলা খেলছি।

আমি যেন অন্য এক দুনিয়ায় বুঁদ হয়ে আছি। ট্রেনে করে রওনা হয়েছি অনিশ্চিত গন্তব্যে। অনেক স্বপ্ন, পরিকল্পনা আর উচ্চাকাঙক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু আমার পথ যেন ফুরায়না। হঠাৎ মনে হলো ঘাড়ে টোকা দিয়ে কে যেন ডাকছে। আমি ভাবলাম টিকিট চেকার হয়ত। ফিরে দেখি তাই। টিকিট চেকার জানালেন আমার গন্তব্য শেষ, আমার নেমে যেতে হবে। আমি অবাক হয়ে বলছি, এটা আমার গন্তব্য না, এখনো সেই স্টেশনে পৌঁছাইনি, যেখানে আমি যেতে চাই।

জীবনে চলার পথে হয়ত এমনই হয়। ঘটনাটি রোমন্থন করে মনে হলো এটাই চরম সত্যি। এই বিশাল বিশ্বের জীবন স্রোতে আমরা ভাসমান ছাড়া আর কিছু না। তবুও আমরা এই জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যস্ত।

বিজ্ঞাপন

অসুখের কথা জানার পর অনেক অনিয়শ্চতার মধ্যেও দমে যেতে চাইনি। মনে মনে ভয়কে জয় করেছি, অনিশ্চয়তাকে চেয়েছি উড়িয়ে দিতে। এরই মধ্যে চূড়ান্ত যন্ত্রণা আমাকে আকড়ে ধরলো। কোনো স্বান্তনা অনুপ্রেরণাই তখন আর কাজ করছিল না। সেই ব্যাথা সেই যন্ত্রণা আমার কাছে ঈশ্বরের চেয়েও বড় হয়ে উঠেছে অসংখ্যবার।

আমার হাসপাতাল ছিল ক্রিকেটের মক্কা লর্ডসের উল্টোদিকে। আমার স্বপ্নের মক্কা। একদিন হাসপাতালের জানালায় দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে নতুন এক উপলব্ধি হলো আমার। কেবল এক রাস্তা দুরত্বে জীবন ও মৃত্যু। প্রথমবার অনুভব করলাম মুক্তির স্বাদ কী। মনে হলো জীবনকে প্রথম সঠিক অর্থে বুঝতে পারলাম। ঠিক করলাম, না, হেরে যাবো না। লড়াইটা আমাকে চালিয়ে যেতে হবে।’

সারাবাংলা/পিএ/পিএম

ইরফান খান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর