Saturday 04 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভাঙ্গনের যে নেই পারাপার!


১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ২২:১০ | আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ২২:২৬

খায়রুল বাসার নির্ঝর

একটা সুখবর দিয়ে শুরু করা যাক। ‘আভাস’ দিয়েছেন তানযীর তুহিন। এ আভাস প্রত্যাবর্তনের। সময়ের মিছিলে প্রাণখুলে হাঁটার, স্লোগানের, চিৎকারের। অক্টোবর ৬-এ শিরোনামহীন ছাড়ার পর ডিসেম্বর ১৬-তে আভাস নামে নতুন ব্যান্ড ঘোষণা পর্যন্ত মাঝের সময়টা ছিলো ভীষণ অস্থির। এ সময়ে একক তুহিনে যেমন হতাশ হয়েছে রকপ্রেমিরা, তেমনি ইউটিউবে-ফেসবুকে শিরোনামহীনের নতুন মিউজিক ভিডিওর নিচে অসংখ্য কমেন্টের ভীড়ে একটা সুরই ঘুরেফিরে গুঞ্জরিত হয়েছে- তুহিন আসুক ফিরে।

বিজ্ঞাপন

যে হতাশা এখনও ব্যক্ত হয় ওয়ারফেজের বেলায়। মিজান ছেড়ে যাওয়ার পর ওয়ারফেজ বাস্তবিক অর্থেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুণ্যতা পূরণ করতে পলাশ এসেছেন যদিও, কিন্তু শ্রোতাদের মন ওইভাবে মাতাতে পারেননি। ফলে ওয়ারফেজের কনসার্ট কমে গেছে। কমেছে ক্রেজও।

বেড়েছে উদ্বেগ। ব্যান্ডসংগীতের এই টালমাটাল সময়ে নতুন করে সংশয় যোগ করেছে মাইলসের ঘটনা। একদিকে শাফিন আহমেদ, অন্যদিকে হামিন-মানামরা। শাফিন ছুঁড়েছেন উকিল নোটিশ। হামিন-মানামরা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন ‘মাইলস কারও নিজের না। এখানে কে থাকবে কে থাকবে না, তাতে মাইলসের কিছু যায় আসে না।’ চলছে তীর ছোঁড়াছুঁড়ি, অভিযোগ-অনুযোগ। জল কোন দিকে, কার দিকে গড়াবে আঁচ করা না গেলেও এটা স্পষ্ট যে, দেশের অন্যতম সেরা এবং প্রাচীন এ ব্যান্ডটির গৃহযুদ্ধ সামগ্রিক বাংলা গানের পরিস্থিতিতে ইতিবাচক কিছু যোগ করবে না।

এর আগে গত বছরের শেষের দিকে প্রতিষ্ঠার চৌদ্দ বছর পর চিরকুট থেকে বেরিয়ে যান পিন্টু ঘোষ। তার কণ্ঠে ছিলো একগাদা অভিযোগ, বিষাদের সুর।

এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে একটা প্রশ্নই কেবল ঘুরেফিরে আসে- কেন এই ভাঙ্গন? কেন বোঝাপড়ার টানাপোড়েন? প্রশ্নের সূত্র ধরে সারাবাংলা কথা বলে দুই সিনিয়র ব্যান্ডব্যক্তিত্বের সঙ্গে। তাদের একজন রেঁনেসা ব্যান্ডের নকীব খান। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ব্যান্ডটিকে কোনো ধরণের ভাঙ্গনের মুখোমুখি হতে হয়নি। নকীব খান বলছিলেন-

বিজ্ঞাপন

‘ব্যান্ড হচ্ছে টিমওয়ার্ক। ফ্যামিলির মতো। এখানে ভাঙ্গন ধরার প্রশ্নই আসে না। যদি ভাঙ্গন ধরে কোনো ব্যান্ডে, তাহলে বুঝতে হবে ব্যান্ডমেম্বরদের মধ্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে ঘাটতি আছে। তা না হলে কেন ভাঙ্গবে? ব্যান্ডে বোঝাপড়াটা বেশি জরুরী। এটা ছাড়া ব্যান্ডই হবে না। ভেঙ্গে যাবে। আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে গ্যাপ থাকলে দূরত্ব তৈরি হবে। মনোমালিন্য হবে। ঠিকমতো কাজ হবে না। একটা ব্যান্ড ভেঙ্গে যাওয়ার পেছনে এটাই সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে কাজ করে। অনেক ক্ষেত্রে পয়সাকড়ি নিয়ে সমস্যা হয়। সদস্যদের মধ্যে আন্তরিকতা না থাকলে এমন অনেক কিছুই ঘটতে পারে।’

একই বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছিলো ফিডব্যাক ব্যান্ডের ফোয়াদ নাসের বাবুর সঙ্গে। এ ব্যান্ডটির যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৬ সালে। ১৯৯৬ সালে এসে ব্যান্ডটি প্রথমবারের মতো বড় ভাঙ্গনের মুখে পড়ে। বেরিয়ে যান মাকসুদ। পরের বছর মাকসুদ গঠন করেন নতুন ব্যান্ড ‘মাকসুদ ও ঢাকা’। ফোয়াদ নাসের বাবু অবশ্য এই ভাঙ্গনকে আর দশটা ঘটনার মতোই ‘স্বাভাবিক’ হিসেবে দেখছেন-

‘ব্যান্ডের ভেতরে এ সমস্যা সব সময়ই ছিলো। সব সময় মানে, আমরা তো প্রত্যেকে ইনডিভিজুয়াল। সুতরাং এমন ঘটনা একটা পরিবারের মধ্যেও ঘটতে পারে। একটা পরিবারে যদি পাঁচ ভাইবোন থাকে, তাদের মধ্যেও মিল না হতে পারে। কোনো বিষয়ে একমতে না-ও পৌঁছাতে পারে। সুতরাং সে হিসেবে ব্যান্ড, দল এবং যতোকিছু আছে; সবার মধ্যেই এ ধরণের মতপার্থক্য তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। তবে খুব ভালো হয় যদি মতপার্থক্যগুলো নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে ফেলা যায়! আর যদি একেবারেই না মেলে, তাহলে প্রত্যেকে আলাদা দল করতে পারে। আমি একটা দল করতে পারি, এক্সওয়াইজেড আলাদা দল করতে পারে। এসব নিয়ে বাইরে অতো হৈচৈ না করে মিটিয়ে ফেলা ভালো। সেটাই আমার প্রত্যাশা।’

সারাবাংলা/কেবিএন

বিজ্ঞাপন

না ফেরার দেশে অঞ্জনা
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৫৪

এই তাসকিনকে সমীহ করবেন যে কেউ
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৪৭

আরো

সম্পর্কিত খবর