নিউ ওয়েব সিনেমার জনকের মহাপ্রয়াণ
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬:৪৩
‘ব্রেথলেস’, ‘কন্টেম্পট’ এর মতো নিরীক্ষাধর্মী ছবি দিয়ে পুরো বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। পেয়েছেন ‘নিউ ওয়েব সিনেমার জনক’ উপাধি। ফ্রান্সের কিংবদন্তি নির্মাতা জঁ লুক গদার ৯১ বছর বয়সে চলে গেলেন পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমকে তার পরিবার খবরটি নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, বার্ধক্যজনিত নানান রোগে দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ ছিলেন এ নির্মাতা। মঙ্গলবার তিনি মারা যান।
মৌলবাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ, আইকনোক্লাস্টিক নীতি অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানের রীতিনীতি বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সব সময়েই।
১৯৩০ সালে প্যারিসে জন্ম নেন তিনি। জন্ম হয়েছিল উচ্চবিত্ত পরিবারে। বাবা ছিলেন ডাক্তার। মা ছিলেন ‘ব্যাঙ্ক পারিবাস’ নামক ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতার কন্যা। সুইজারল্যান্ডের জেনেভা লেকের তীরে ছিল তাঁর বিদ্যালয়।
ষাটের দশক থেকে ছবি নিয়ে তার নিরন্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা বহু পরিচালককে দিশা দেখিয়েছিল। চলচ্চিত্রে নতুন যুগের সূচনা করেছিলেন গোদার। তাঁর বানানো একের পর এক ছবি ফরাসি চলচ্চিত্রের অচলায়তন ভেঙে দিয়েছিল। চিরাচরিত পারিপাট্য, চিত্রায়নের ব্যাকরণকে ধাক্কা দিয়েছিল গোদারের হ্যান্ডহেল্ড ক্যামেরার কাজ।
‘জাম্প কাট’ ছিল তার কৃষ্টির অন্যতম মহৎ সৃষ্টি।
১৯৬০ সালে তার প্রথম ছবি ‘ব্রেথলেস’ নতুন এক সিনেমার ভাষা জন্ম দেয়। এরপর ‘ম্যাস্কুলিন ফেমিনিন’, ‘দ্য লিটল সোলজার’, মেড ইন ইউ এস এ’-এর মতো একের পর এক কালজয়ী ছবি উনি আমাদের উপহার দিয়েছেন।
সিনেমার নিজস্ব ভাষা তৈরিতে যে সমস্ত বিশ্ব-সেরা পরিচালকদের অবদান আছে,তাদের মধ্যে অন্যতম জঁ লুক গদার। অনেক পরিচালকের কাছেই তিনি ছিলেন অনুপ্রেরণা। এদের মধ্যে রয়েছেন মার্টিন স্কোরসেজি, কোয়েন্টিন টারান্টিনো, ব্রায়ান ডে পালমা, স্টিভেন সোডারবার্গ, ডি. এ. পেনবেকার, রবার্ট অল্টম্যানসহ প্রমুখ।
গদার শেষ ছবি বানিয়েছেন ২০১৮-তে। ‘দ্য ইমেজ বুক’। এই ছবি কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘প্যাম ডি’অর’ সম্মান পায়। গত বছর কেরালা আর্ন্তজাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রায় ৮৫ মিনিটের একটা ‘ভার্চুয়াল’ সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় গদারের। সেখানেই তিনি বলেছিলেন, “আমি আমার সিনেমা-জীবন শেষ করতে চলেছি। আর দুটো স্ক্রিপ্ট আমার কাছে আছে, ওই দুটো ছবি করেই গুডবাই সিনেমা।”
সারাবাংলা/এজেডএস