‘কার ছবি নেই, কেউ কি ছিল’…
১৯ নভেম্বর ২০২০ ১৫:৫০ | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২০ ১৬:৫৯
সঞ্জীব চৌধুরী, বাংলাদেশে তারুণ্যের অনন্য এক রাজনৈতিক বয়ান তৈরির দিকপাল; মায়েস্ত্রো রকস্টার। তার চলে যাওয়ার ১৩ বছর পর আজ, সঞ্জীবের প্রিয় পদচারণার প্রিয় ক্ষেত্র গণমাধ্যম অধিকারের প্রশ্নে যে ভাষায় কথা বলছে, সেখানে তার অনুপস্থিতির ব্যাপারে ভাবতে গেলে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে তারই বাণী – ‘কার ছবি নেই কেউ কি ছিল/এই ভেবে ডুবে গেছে রাত/ প্রশ্নেও নেই উত্তর নেই/ মাঝরাতে ডুবেছে মাতাল/ নেই কাছে নেই গল্প তোমার/ চমকে উঠে ডাকে আয় কাছে আয়।’
২০০৭ সালের ১৯ নভেম্বর মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ তাকে দৃশ্যত থামিয়ে দিয়েছিল। সহস্র শঙ্খচিলের শরীর চেরা কান্না কাঁদিয়ে হা হা শূণ্য আকাশ কাঁপিয়ে চলে গেলেন সঞ্জীব আর নির্জীব করে গেলেন মুখপাত্রদের। তার মতো একটি আওয়াজের শূন্যতা বাংলাদেশের অধিকার আন্দোলনকে প্লাটফর্মহীন করে ফেলেছে।
দলছুট ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সঞ্জীব চৌধুরীর জন্ম ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর। শিক্ষাজীবনে বাংলাদেশের শীর্ষ মেধাবীদের তালিকায় নাম ছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন। ক্যারিয়ারও ছিল সংবাদপত্রে। দৈনিক উত্তরণ থেকে শুরু,পরবর্তীতে আজকের কাগজ, ভোরের কাগজ ও যায়যায়দিনসহ বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় কাজ করেছেন। তার প্রকাশিত একক অ্যালবাম স্বপ্নবাজী। এছাড়াও দলছুটের সঙ্গে প্রকাশিত অ্যালবাম আহ, হৃদয়পুর, আকাশচুরি এবং জোছনাবিহার।
তার সমকালে বাংলাদেশের যে কোনো রাজনৈতিক আন্দোলনে গণমানুষের অধিকারের প্রশ্নে সোচ্চার ছিলেন সঞ্জীব চৌধুরী। স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। ছাত্রাবস্থায় ঢাকা কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার কলম, তার কন্ঠ আর তার উপস্থিতি বাংলাদেশের বহু সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে এগিয়ে দিয়েছে। কিন্তু, তিনি জীবনে থমকে গিয়েছেন মাত্র তেতাল্লিশেই।
২০০৭ সালের আজকের এইদিনে ((১৯ নভেম্বর) সঞ্জীব চৌধুরী না ফেরার দেশে চলে যান। তিনি যে স্বপ্নের কথা বলতে চেয়েছেন, সেই স্বপ্নগুলো সবার মধ্যে সংক্রমিত হোক।