‘আমাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা’
২৮ অক্টোবর ২০২০ ১৭:২৬ | আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২০ ২২:৪৬
প্রতারণার মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর জিম্মায় জামিন পেয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও উপস্থাপক দেবাশীষ বিশ্বাস। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত খবরকে পুরোপুরি সত্যি নয় বলে দাবি করেছেন দেবাশীষ বিশ্বাস।
এ বিষয়ে তিনি সারাবাংলা.নেটকে বলেন, ‘প্রথমত মামলা হয়েছে এটা সত্য। কিন্তু সব জায়গায় বলা হচ্ছে আমাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে।’
আইনজীবীর জিম্মায় দেবাশীষ বিশ্বাসের জামিন
কারাগারে পাঠানো হয়েছে নয়, পাঠানোর নির্দেশ—এমনটা বলা হয়েছে প্রকাশিত সংবাদে জানালে এর জবাবে দেবাশীষ বলেন, ‘কারাগারে পাঠানোর মতো কোনো বিষয়ই ঘটেনি। কারাগারে পাঠানোর ১০ মিনিটের মধ্যে জামিন কিভাবে হয়?’
১০ মিনিট তো বলা হয়নি, বলা হয়েছে সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর জামিন।
‘আটক বা গ্রেফতারের ঘটনা ঘটলেই না জামিনের বিষয় আসতো’— বলেন দেবাশীষ।
তিনি পুরো ঘটনায় ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘ঘটনা যেটা ঘটেছে সেটা আসলে একটা ভুল বোঝাবুঝি। এটা সত্য আমি লিটন সরকারের কাছে চারটি ছবির (মায়ের মর্যাদা, শুভ বিবাহ, অপেক্ষা, অজান্তে) কপিরাইট বাবদ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়েছি। কিন্তু আমারই প্রযোজনা অফিসের একজন স্টাফ আমার স্বাক্ষর জাল করে অন্য একজনের কাছে বিক্রি করে দেয়। ওই ব্যক্তি আগে ইউটিউবে আপ করে দেওয়ায় লিটন সাহেব কপিরাইট ক্লেইম পান। আমি তাদেরকে মামলার আগেও এ নিয়ে বলেছিলাম।’
‘জজ সাহেব আমাদের দুপক্ষকে একসঙ্গে বসে সমাঝোতা করতে বলেছেন। আমি তাকে বলেছি আমি চেষ্টা করবো কর্মচারীকে ধরার। যাতে লিটন সরকারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায়’—বলেন দেবাশীষ।
এর আজ বুধবার (২৮ অক্টোবর) প্রতারণা অভিযোগে লিটন সরকার ইমন নামে এক ব্যক্তির দায়ের করা মামলায় ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর দেবাশীষ বিশ্বাসের জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। কারাগারে পাঠানোর সাড়ে ৩ ঘণ্টা পরই বাদী আইনজীবীর জিম্মায় আপোষের শর্তে ১০ হাজার টাকায় মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই বাণিজ্যিক শর্তে পিএনটিভি ইউটিউব চ্যানেলের মালিক লিটন সরকার ইমন নামে এক ব্যক্তি দেবাশীষ বিশ্বাসের মা গায়েত্রী বিশ্বাস প্রযোজিত চারটি বাংলা চলচ্চিত্র মায়ের মর্যাদা, শুভ বিবাহ, অপেক্ষা এবং অজান্তে ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করতে ৬০ বছরের জন্য ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় কিনে নেন।
তিনি ছবিগুলো ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করলে ইউটিউব চ্যানেল কর্তৃপক্ষ চ্যানেল বন্ধ করে দেন।
এরপরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ২০১৭ সালে এ চারটি চলচ্চিত্র ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করার আগেই দেবাশীষ বিশ্বাস অন্য কারো কাছে ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন। যার ফলে ইউটিউব চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ছবিগুলো আপলোড করার পর লিটন সরকার ইমনের চ্যানেল বন্ধ করে দেয়।
ওই ঘটনায় ২০১৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লিটন সরকার ইমন বাদী হয়ে দেবাশীষ বিশ্বাসের নামে প্রতারণার মামলা করেন।
ওই ঘটনায় মিরপুর রূপনগর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। তদন্ত কর্মকর্তা ও রূপনগর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. মোকাম্মেল হোসেন তদন্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন।
এরপর আদালত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর আসামিদের আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। আসামিরা হাজির না হওয়ায় চলতি বছর ২১ অক্টোবর বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ারা জারি করেন।
২০০২ সালে ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ দিয়ে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন দেবাশীষ বিশ্বাস। তার পরিচালিত ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ বর্তমানে মুক্তির মিছিলে রয়েছে। এতে অভিনয় করেছেন বাপ্পী চৌধুরী ও অপু বিশ্বাস।
প্রতারণার মামলায় দেবাশীষ বিশ্বাস কারাগারে