করোনায় মারা গেলেন সাদেক বাচ্চু
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১২:২৬ | আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:৪৭
চলচ্চিত্র অভিনেতা সাদেক বাচ্চু মারা গিয়েছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিউমোনিয়া ও হার্টের জটিলতায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ আশীষ কুমার চক্রবর্তী।
আশীষ কুমার চক্রবর্তী সারাবাংলাকে বলেন, ‘সাদেক বাচ্চু সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে মারা গিয়েছেন। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি এ গুণী অভিনেতাকে বাঁচিয়ে রাখার। কিন্তু ওনার ফুসফুসের ৮০ শতাংশই অকার্যকর হয়ে গিয়েছিল। ’
৬ সেপ্টেম্বর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে অভিনেতা সাদেক বাচ্চুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। করোনার উপসর্গ থাকায় চিকিৎসকদের পরামর্শে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গত শুক্রবার পরীক্ষার ফল হাতে পেয়েছেন তাঁরা। এতে দেখা যায় সাদেক বাচ্চু কোভিড-১৯ পজিটিভ। পরবর্তীতে ১১ সেপ্টেম্বর তাকে ঢাকা মেডিকেল থেকে ইউনিভার্সেল মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখান গত ১২ সেপ্টেম্বর তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
সাদেক বাচ্চু তার পাঁচ দশকের ক্যারিয়ারে মঞ্চ, বেতার, টেলিভিশন ও সিনেমায় সমানভাবে কাজ করেছেন। নব্বইয়ের দশকে পরিচালক এহতেশামের ‘চাঁদনী’ ছবিতে অভিনয় করে পরিচিতি পান তিনি। রেডিও বা টেলিভিশনের আগে তিনি অভিনয় শুরু করেন মঞ্চে। তার নাট্যদলের নাম মতিঝিল থিয়েটার; এমনকি এখনো তিনি দলটির সভাপতি। এখনো নাটক লেখেন, নির্দেশনা দেন। চলতি বছর বইমেলার মুক্তমঞ্চে নাটক নিয়ে ওঠে তাদের দলটি।
মহিলা সমিতির মঞ্চে এক নাটকে সাদেক বাচ্চুর অভিনয় দেখে তাকে বিটিভিতে ডেকে নেন প্রযোজক আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম। ১৯৭৪ সালে বিটিভিতে তিনি অভিনয় করেন ‘প্রথম অঙ্গীকার’ নাটকে। এখন পর্যন্ত তার অভিনীত নাটকের সংখ্যা হাজারের বেশি। প্রথম অভিনীত সিনেমা শহীদুল আমিন পরিচালিত ‘রামের সুমতি’।
বহুমাত্রিক এই অভিনেতার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার’, ‘জীবননদীর তীরে’, ‘জোর করে ভালোবাসা হয় না’, ‘তোমার মাঝে আমি’, ‘ঢাকা টু বোম্বে’, ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’, ‘এক জবান’, ‘আমার স্বপ্ন আমার সংসার’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ‘বধূবরণ’, ‘ময়দান’, ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘প্রিয়জন’, ‘সুজন সখী’ প্রভৃতি।
২০১৮ সালে ‘একটি সিনেমার গল্প’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য জীবনের একমাত্র ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ পান সাদেক বাচ্চু।