Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সহায়তা না পেলে বন্ধ হবে স্টার সিনেপ্লেক্স


১২ আগস্ট ২০২০ ২২:২৮ | আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২০ ২৩:৩৫

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটি শেষ হওয়ার পর অফিস-আদালত সব খুলে গেছে, চলছে গণপরিবহনও। শপিং মল, রেস্টুরেন্ট, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট, পর্যটন, ধর্মীয় উপসনালয়সহ প্রায় সবকিছু খুলে দেওয়া হলেও সিনেমা হল খোলেনি এখনো। এ পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা না পেলে বন্ধ হয়ে যাবে দেশের প্রথম মাল্টিপ্লেক্স স্টার সিনেপ্লেক্স।

বুধবার (১২ আগস্ট) হলটির মহাখালী শাখায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটিই জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার মাহবুব রহমান রুহেল। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঁচটি দাবি তুলে ধরেন, যার মধ্যে আর্থিক সুবিধা প্রদান ছাড়াও উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র আমদানির কথাও রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

দেশের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর মার্চ মাসেই সাধারণ ছুটি ঘোষণা হয়। ওই সময়ই অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠানের মতো বন্ধ হয়ে যায় সিনেমা হলগুলোও, বন্ধ হয় স্টার সিনেপ্লেক্সের তিনটি শাখার ১৫টি হল। সম্পূর্ণ প্রস্তুত হলেও চালু করা যায়নি এর মিরপুর শাখা। সে অবস্থায় সাড়ে চার মাস পার করার পর আর নিজেদের টেনে নিতে পারছে না বলে জানালেন সিনেপ্লেক্সের রুহেল।

তিনি বলেন, ‘দর্শকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে আমরা ২০১৮ ও ২০১৯ সালে উচ্চ সুদে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে স্টার সিনেপ্লেক্সের তিনটি নতুন শাখা চালু করি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় আমাদের কোনো আয় নেই। ঋণের সুদ ও কর্মীদের বেতন চালিয়ে নেওয়া রীতিমত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সিনেমা হল চালু না হলে এবং সরকারের কাছ থেকে জরুরি আর্থিক সহায়তা না পেলে আমাদের হলগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’

বিজ্ঞাপন

মাহবুব রহমান রুহেল শপিং মল কর্তৃপক্ষের কাছে করোনাকালীন ভাড়া মওকুফ এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অর্ধেক ভাড়া নেওয়ার অনুরোধ জানান। একইসঙ্গে প্রযোজক সমিতির কাছে নতুন ছবি সরবরাহের অনুরোধ রাখেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঁচটি দাবি তুলে ধরেন রুহেল। দাবিগুলো হলো— নগরবাসীর বিনোদনের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনতিবিলম্বে সিনেমা হলসমূহ খুলে দেওয়া, জরুরি আর্থিক সহায়তা কিংবা প্রণোদনা তহবিল ঘোষণা, সিনেমা হলের টিকিটের ওপর সব ধরনের মূসক ও কর মওকুফের সুযোগ প্রদান, সুদবিহীন ঋণ প্রদানের অনুমোদন এবং উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র শর্তহীনভাবে আমদানির অনুমতি প্রদান।

মাহবুব রহমান রুহেল বলেন, আমেরিকান সরকার মুভি থিয়েটারসহ ক্ষতিগ্রস্ত খাতের জন্য ২ ট্রিলিয়ন ডলার সহায়তা বিল পাস করেছে। ফ্রান্সের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ৫ মিলিয়ন ইউরো ও যুক্তরাজ্য দিয়েছে ২ বিলিয়ন ডলার। করোনা পরবর্তী সময়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে সিনেমা হল খুলে দিলে পরিচালন ব্যয় বেড়ে যাবে। তাই টিকেটের ওপর সব ধরনের কর মওকুফ করা হোক। এছাড়া সুদবিহীন ঋণসহ আর্থিক সহায়তা জরুরি।

ভারতীয় ছবি আমদানি প্রসঙ্গে রুহেল বলেন, ‘হল খুললেই হয়তো নতুন ছবি দেওয়া সম্ভব হবে না। তৈরি হয়ে থাকা ছবির মধ্যে মাত্র দুই থেকে তিনটি সিনেপ্লেক্সে চালানোর উপযুক্ত। এ অবস্থায় নতুন বাংলা ছবি আসার আগ পর্যন্ত ভারতীয় ছবি চালানোর অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।’ ভারতীয় ছবি প্রদর্শনে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে— এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি তাদের জানা নেই।

হল মালিক সমিতি কিংবা প্রযোজক সমিতির কোনো প্রতিনিধি সংবাদ সম্মেলনে নেই কেন— এমন প্রশ্নের জবাবে সিনেপ্লেক্সের এই কর্ণধার বলেন, ‘বাংলাদেশে মাল্টিপ্লেক্সে আমরা ছাড়া ওইভাবে আর কেউ নেই। তাই মাল্টিপ্লেক্সগুলো কোনো সংগঠনও নেই। তাছাড়া হল মালিক সমিতি ও প্রযোজক সমিতির মাধ্যমে আমরা সরকারের উচ্চ মহলে বেশ কয়েকবার কথা বলেছি।’

রুহেল জানান, স্টার সিনেপ্লেক্সে এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক বাংলা চবি প্রদর্শিত হয়েছে, যার মধ্যে অর্ধেকই ব্যবসায়িকভাবে সফল। তিনি বলেন, তারেক মাসুদের ‘অর্ন্তযাত্রা’ আমরা একমাস চালিয়েছি কোনো লাভ না করেই। শুধুমাত্র বাংলা ছবি, ভালো ছবির প্রতি ভালোবাসা থেকে সেটি দেখিয়েছি। এরকম অনেক ছবিই আমরা চালিয়েছি। স্টার সিনেপ্লেক্স বন্ধ হয়ে গেলে দেশি ভালো ছবির যে দর্শক বিগত এক দশকে নতুন করে তৈরি হয়েছে— সেই প্রক্রিয়াও ব্যাহত হবে বলে মন্তব্য করেন রুহেল।

আর্থিক প্রণোদনা চলচ্চিত্র টপ নিউজ মাহবুব রহমান রুহেল স্টার সিনেপ্লেক্স

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর