Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুফি সন্ধ্যায় জীবনের গান


২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৭:০৬ | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:৫৩

তুহিন সাইফুল ।। 

শীত শেষ হয়ে বসন্ত চলে এসেছে। ‘কোকিলের ডাক নেই, ফুলেদের ঘ্রাণ নেই’ এমন সমীকরণে ফুরিয়ে গেছে ফাগুনের দশটি দিন। এই সিমেন্টের জঙ্গলে যেন ঋতু বদলের চিহ্ন পড়ে না। তাই যানজট, যন্ত্রণা আর জনভোগান্তির শহর ঢাকায় সারাবছর একই রকমভাবে জীবনকে বয়ে চলে মানুষ।

কিছু একটা পরিবর্তন তবুও হয়। শহর জুড়ে সুর্যের উত্তাপ বাড়ে। মোটা কাপড়, কম্বল খুঁজে নেয় বছরব্যাপী বাধ্যতামূলক নির্বাসন। ঘামতে ঘামতে বিলবোর্ডের ছায়ায় এসে থামে স্কুল পলাতক কিশোর। বিকেলের সঙ্গে সন্ধ্যার দূরত্ব কিছুটা বাড়ে, সন্ধ্যায় বাড়ে নাগরিক কোলাহল। এর মাঝেই উত্তরের হাওয়ার মতো সহজ সুরের গান, দোতারা কিংবা বাঁশির মায়া মায়া টান ভেসে বেড়ায় অন্ধগলিতে।

সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমিকে বলা যায় উৎসবের শহর। সত্যিকারের শহর যখন ডুবে থাকে বিষাদের চোরাবালিতে, এখানে তখনো খিলখিল করে হাসে শিল্পের পোশাকে মোড়া রমনীরা। এখানে যেন হাসি আর উৎসব ছাড়া কিছু নেই! তাই এখান থেকেই উৎসবের রঙ ছড়িয়ে পড়ে শহরময়।

গতকাল শুক্রবার এই শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী সুফি উৎসব। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে সুফি ও লোকগানের শিল্পীরা এই উৎসবে জড়ো হয়েছেন নিজেদের সুচিন্তা ও সুভাষন সুরের যাদুতে ছড়িয়ে দিতে।

জনশ্রুতি রয়েছে, এই সহজিয়া জনপদে ধর্ম এসেছে গানকে মাধ্যম করে। এখানে ভাববাদী মরমীয়া দর্শনের চর্চাও হয়েছে গানে গানে। উৎসবের প্রথম দিনেই বাউল শফি মণ্ডলের পরিবেশনায় পাওয়া গেলো তার আঁচ। সাদা পাঞ্জাবী, গলায় গামছা, কাঁধে ঝুলানো দোতারায় এই গায়ককে মনে হচ্ছিলো প্রাচীন সাধু। তার গানেও উঠেছে প্রাচীন লোক দর্শনের সহজতম জীবনবোধ।

বিজ্ঞাপন

ভারত থেকে গাইতে এসেছেন সুফি বেওরা। এক ঘন্টার পরিবেশনায় তিনি শুনিয়েছেন জনপ্রিয় সব সুফি গান। তার গলায় দ্বাদশ শতকের বিখ্যাত সিন্ধি সুফি লাল শাহবাজ কালান্দারের ‘দমাদম মাস্ত কালান্দার’ গানটি মুগ্ধ হয়ে শুনেছে শ্রোতারা। একেবারে শেষে তিনি বাংলাদেশকে নিয়েও একটি গান পরিবেশনা করেন। তার আগে সমীর কাওয়ালের পরিবেশনাও স্পর্শ করেছে দেশের সুফি সঙ্গীত প্রেমীদের।

এছাড়াও উৎসবের প্রথম দিনে গান পরিবেশন করেন বাংলাদেশের মাইজভাণ্ডার মরমী গোষ্ঠী, রাফা ও পারভেজ। তিনদিনের এই উৎসবে বাংলাদেশের শিল্পী ছাড়াও ভারত, তুরস্ক ও ইরানের ১১৯ জন শিল্পী অংশগ্রহণ করছেন।

ছবি: আশীষ সেনগুপ্ত

সারাবাংলা/টিএস/পিএম 

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর