মৃত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারও ছাত্র আন্দোলনে হামলার আসামি
২৬ মার্চ ২০২৫ ১৮:৪২ | আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৫ ২২:১৭
রাজশাহী: রাজশাহী মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ডা. আবদুল মান্নানের মৃত্যুর পরও ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলার আসামি হয়েছেন । তিনি এই মামলার ৫৮ নম্বর আসামি। মামলাটি করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের এক সমর্থক।
রোববার (২৩ মার্চ) নগরীর বোয়ালিয়া থানায় করা একটি মামলায় আসামি করা হয়েছে তাকে। মামলার প্রধান আসামি মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সাবেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান বাদশার ছেলে রুয়েট কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান দীপনকে। মামলায় মোট ১২৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া, ৩০০ থেকে ৩৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলাটির বাদীর নাম আব্দুল আলীম দুলাল (২২)। তার বাবার নাম মুশারফ হোসেন। নগরের রাজপাড়া থানার মোল্লাপাড়া মহল্লায় তার বাড়ি। আর তার ভাই শফিকুল ইসলাম জামায়াতে ইসলামীর কর্মী। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে আব্দুল আলীম নগরীর আলুপট্টি এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন বলে এ মামলা করা হয়।
মামলার ৫৮ নম্বর আসামি প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুল মান্নান মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
আবদুল মান্নান মুক্তিযোদ্ধা সংসদের রাজশাহী মহানগরের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গত ১৭ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। পরদিন রাজশাহীর টিকাপাড়া গোরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার মরদেহ দাফন করা হয়।
মৃত ব্যক্তিকে আসামি করার ব্যাপারে কথা বলতে এজাহারে থাকা বাদী আব্দুল আলীমের মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। এ সময় ফোন ধরেন তার বড় ভাই শফিকুল ইসলাম। শফিকুল জানান, তিনি জামায়াতে ইসলামীর কর্মী। আর তার ভাই আব্দুল আলীম বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সমর্থক। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় তার ভাই আলীম গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। সংগঠনের তদারকিতে মামলা করা হয়েছে।
মামলায় মৃত ব্যক্তিকে আসামি করার ব্যাপারে জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মুরুব্বিরা সবকিছু করেছেন। কোনো বিষয়ে কথা বলার থাকলে মহানগর জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন সরকারের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’
জসিম উদ্দিন সরকার বলেন, ‘মামলা সম্পর্কে আমি তেমন কিছু জানি না। আমাকে আগে খোঁজ নিতে হবে। আগে খোঁজ নিই, তারপরে এ বিষয়ে বলতে পারব।’
বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, ‘আসামির তালিকায় মৃত ব্যক্তি আছেন কিনা তা আমার জানা নেই। এটা খোঁজ নিতে হবে। যদি এ রকম হয় তাহলে আমরা যাচাই করব। মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের সময় অব্যাহতি দেওয়া হবে।
সারাবাংলা/পিটিএম