Saturday 15 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রোজার পণ্যে স্বস্তি, শাকসবজির দাম বাড়তির দিকে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৪ মার্চ ২০২৫ ১০:০১

চট্টগ্রাম নগরীর বাজারের চিত্র। ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের বাজারে রমজানের দ্বিতীয় সপ্তাহেও দামে ক্রেতাকে স্বস্ত্বি দিয়েছে রোজার ভোগ্যপণ্য। চাল ও ভোজ্যতেল ছাড়া রমজানের সকল নিত্যপণ্যের দাম ক্রেতার নাগালের মধ্যেই আছে। তবে প্রায় চারমাস স্বস্তি দেয়ার পর শাকসবজির দাম এখন কিছুটা বাড়তির দিকে। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদিপণ্য, মাছ-মাংসের দাম স্থিতিশীল আছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার ও আসকার দিঘীর পাড় কাঁচাবাজার এবং বিভিন্ন ভাসমান দোকান ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞাপন

নগরীর আসকার দিঘীর পাড়ে ভ্যানগাড়িতে টমেটো বিক্রি হচ্ছিল প্রতি কেজি ১৫ টাকা দরে। একসঙ্গে সাত কেজির ‘প্যাকেজ’ নিলে মিলছে ১০০ টাকায়। আবার এর অদূরেই আরেক ভ্যানগাড়িতে টমেটো বিক্রি হচ্ছিল প্রতিকেজি ১০-১২ টাকায়। সস্তায় টমেটো পেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতা।

বাজারে শীতের শাকসবজির চাহিদা ও সরবরাহ দুটোই কমছে। সরবরাহ কমে আসায় দাম কিছুটা বাড়তির দিকে বলে জানালেন বিক্রেতারা। বাজারে আসতে শুরু করেছে গ্রীষ্মকালীন সবজি। তবে দাম খুবই চড়া দেখা গেছে।

শীতকালীন সবজির মধ্যে বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ১০ থেকে ২০ টাকা, দেশি গাজর ৪০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, মূলা ৪০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আলু প্রতিকেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দামে তেমন হেরফের হয়নি। অন্যদিকে লম্বা বেগুন ৫০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, কাঁচামরিচ ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এগুলোর দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।

বিজ্ঞাপন

গ্রীষ্মকালীন সবজির মধ্যে কাঁকরোল রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে, প্রতিকেজি ২৪০ থেকে ২৮০, এমনকি মানভেদে ৩০০ টাকায়ও। পটল-ঢেঁড়স ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া করলা ১০০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পেঁয়াজকলি ৩০ টাকা, কচুর লতি ১০০ টাকা, কচুরমুখী ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

লেবু বৃহস্পতিবারের (১৩ মার্চ) বাজারে আকারভেদে ১২০ থেকে ২২০ টাকা, শসা প্রতিকেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কাঁচা মরিচ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধনেপাতা ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

বিভিন্ন ধরনের শাকের দাম বেড়েছে। লাল শাক, লাউ শাক, মুলা শাক, পালং শাক, কলমি শাক, ডাঁটা শাক ১০ থেকে ২০ টাকা আঁটি দরে এতদিন বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

রমজানের পণ্য পেঁয়াজ, ছোলা, চিনি গত বছরের তুলনায় দাম অনেক কম বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন। তাদের তথ্যমতে, গত রমজানে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল প্রতিকেজি সর্বোচ্চ ১২০ টাকা পর্যন্ত। এবার বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোলা বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১১০ টাকায়। গত বছরের ১৪৫-১৬০ টাকার চিনি এবারের রমজানে বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৪০ টাকায়।

তবে ভোজ্যতেলের বাজারে এখনও শৃঙ্খলা ফেরেনি। পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, পরিবেশক চাহিদামতো সয়াবিন তেলের বোতল সরবরাহ করছে না। অন্যদিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন দোকানে অভিযান চালিয়ে ‘লুকিয়ে রাখা’ সয়াবিন তেলের বোতল বের করে আনছেন। তারা ‘টি কে’ গ্রুপের এক পরিবেশকের গুদাম থেকে ছয় হাজার লিটারের মতো বোতলজাত সয়াবিন তেলও উদ্ধার করেছে।

বাজারে পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল ৮৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক লিটার বোতল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা, দুই লিটার বোতল ৩৪৮ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৮০ টাকা, পাম সুপার ১৬০ টাকা, সরিষার তেল খোলা বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায়।

চালের মধ্যে প্রতি কেজি নাজিরশাইল হাফসিদ্ধ মানভেদে ৮৫ ও ৯০ টাকা, মিনিকেট সরু আতপ চাল মানভেদে ৫৮, ৬৫ ও ৭৪ টাকা, পাইজাম সিদ্ধ ৯০ টাকায়, ব্রি-২৮ চাল মানভেদে ৮০ ও ৮৬ টাকা, স্বর্ণা, চায়না ও ইরি মানের মোটা চাল ৫২ থেকে ৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা চিনিগুঁড়া প্রতিকেজি ১৪০ টাকা এবং কিছুটা উন্নতমানের চিনিগুঁড়া বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। প্যাকেট পোলাও চাল ১৫০ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যান্য মুদিপণ্যের মধ্যে ছোট মসুর ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, বুটের ডাল ১২০ টাকা, মাষকলাইয়ের ডাল ১৯০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১২০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা, খোলা চিনি ১২০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। চায়না রসুন প্রতি কেজি ২৩০ টাকা, দেশি রসুন ১০০ টাকা এবং চায়না আদা ২০০ থেকে ২২০ টাকা, নতুন ভারতীয় আদা ১২০ দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৮০ টাকা, পাম সুপার ১৬০ টাকা, সরিষার তেল খোলা বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায়।

মাছের মধ্যে রুই মাছ ২৮০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতলা মাছ ৩০০ থেকে ৪৪০ টাকা, কালিবাউশ ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, ছোট-বড় চিংড়ি মাছ ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৫০০ টাকা, চাষের ও দেশি কৈ মাছ ২০০ থেকে ১০০০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, চাষের ও দেশি শিং মাছ ৪০০ থেকে ১২০০ টাকা, টেংরা মাছ ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা, মেনি মাছ ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চিতল মাছ ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা, সরপুঁটি মাছ ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ৪৫০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

বাজারে খামারের ব্রয়লার মুরগি ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা, সোনালী মুরগি ২৮০ থেকে ২৮৫ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। হাঁড়সহ গরুর মাংস ৭৫০ টাকা, কলিজা ৫৫০ টাকা ও হাঁড়বিহীন ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর খাসির মাংস ১১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

বাজারে ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম ১২০ টাকা, সাদা ডিম ১২০ টাকা আর দেশি মুরগির ডিম ২১০ টাকা ও হাঁসের ডিম ২৪৫ টাকা বিক্রি হয়েছে।

সারাবাংলা/আরডি/এনজে

তেল বাজার মূল্য রমজান সবজি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর