ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে কুমিল্লায় উত্তাল শিক্ষার্থীরা
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৪২
কুমিল্লা: সারাদেশে একের পর এক ধর্ষণ, ডাকাতি, ছিনতাই ও সকল প্রকার অরাজকতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিবাদ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে কুমিল্লার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচিতে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে করা এই বিক্ষোভ মিছিলের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘ধর্ষণের সংখ্যা বাড়ার আগেই ধর্ষকদের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে’।
প্রথমে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে এক সংক্ষিপ্ত মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা৷ এসময় শিক্ষার্থীরা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানায়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত ও ফাঁসি দেওয়া, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, কঠোর আইন প্রয়োগ এবং যৌন নিপীড়নবিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান প্রশাসনের নিকট।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া আব্দুল মতিন খসরু কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীর উম্মে সায়মা বলেন, ‘আমরা চাই একটি নিরাপদ বাংলাদেশ যেখানে প্রত্যেকটি মেয়ে নিরাপদে বাঁচতে পারবে। যেখানে বাবার কাছে মেয়ে নিরাপদ থাকবে।’
কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া স্কুলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মিতুল আক্তার বলেন, ‘আজকে আমাদের বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত গণধর্ষণের ঘটনা ঘটছে যেটা মেনে নেওয়া যায় না। বাবার হাতে মেয়ে ধর্ষিত হচ্ছে। আমরা এসবের বিচার চাই। নারীরা রাস্তায়ও নিরাপদ নয় এমন কি বাসায় ও নিরাপদ নয়। যেখানে সেখানে নারীদের উপর অত্যাচার নির্যাতন করা হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের নিকট এর বিচার চাই। বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। আমরা ঘরে ফিরে যাব না।’
রূপসী বাংলা কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া জাফরিন বলেন, আমাদের এই শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশে প্রতিনিয়তই ধর্ষণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ঘটছে৷ অবশ্য আমি এখন এটাকে আর শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ বলবো না কারণ এখানে এখন প্রতিনিয়ত অরাজকতা হচ্ছে। আমরা ধর্ষকদের শাস্তি নয় তাদের ফাঁসি চাই। তাদেরকে সরাসরি মৃত্যু দন্ড দেওয়া হোক। একটি দেশের মূল শক্তি হচ্ছে জনগণ। কিন্তু আমাদের সরকার সেই জনগণের নিরাপত্তাই নিশ্চিত করতে পারছেন না। আর জনগণের নিরাপত্তা না থাকলে আমরা ঘর থেকে বের হব কিভাবে। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পরে আমাদেরকে বলা হয়েছিল দেশে আর কোন চাঁদাবাজি রাহাজানি হবে না। কিন্তু এখন প্রতিনিয়তই সেটা হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের নিকট এসবের বিচার চাই।
এ সময় মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই, আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই– ইত্যাদি স্লোগান তোলে। এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং সরকারের কাছে ধর্ষণের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কার্যকর বাস্তবায়নের দাবি জানান।
সারাবাংলা/এমপি