Friday 18 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খেলনার দোকান থেকে বিট কয়েন ব্যবসা, এখন কয়েক লাখ ডলারের মালিক!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৩ মে ২০২১ ২০:৩৩ | আপডেট: ৩ মে ২০২১ ২৩:৩৮

ঢাকা: শুরুটা ২০১৩ সালে। ছোট্ট একটি দোকানে কম্পিউটার বসিয়ে বাচ্চাদের কাপড় ও খেলনার ব্যবসা শুরু করেন। সেখান থেকে আস্তে আস্তে গড়ে তোলেন বেসিক বিজ মার্কেটিং নামক প্রতিষ্ঠান। আউটসোর্সিং মার্কেটিংয়ের ওই প্রতিষ্ঠানের আড়ালেই তার চলছিল অবৈধ বিট কয়েন ব্যবসা। বাংলাদেশে অবৈধ বিট কয়েন ব্যবসার মূলহোতা ইসমাইল হোসেন সুমন ওরফে কয়েন সুমনের রয়েছে একাধিক ভার্চুয়াল ওয়ালেট। যেখানে মজুদ রয়েছে বিট কয়েনে অর্জিত লক্ষাধিক ডলার। শুধু তাই নয়, বিট কয়েন ব্যবসার মাধ্যমে গড়েছেন ফ্ল্যাট, প্লট, সুপার শপসহ গাড়ি বাড়ি ও নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২ মে) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকার বেসিক বিজ মার্কেটিংয়ে অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব-১-এর একটি দল। সেখান থেকে বাংলাদেশে অবৈধ বিট কয়েন ব্যবসার মূলহোতা ও অনলাইনে প্রতারণার অভিযোগে ইসমাইল হোসেন সুমন ওরফে কয়েন সুমনসহ ১২ জন আটক করা হয়।

গ্রেফতার অন্যরা হলেন- আবুল বাশার রুবেল (২৮), আরমান পিয়াস (৩১), রায়হান আলম সিদ্দিকি (২৮), মো. জোবায়ের (১৮), মেহেদী হাসান রাহাত (২৪), মেহেদী হাসান (১৯), রাকিবুল হাসান (২৩) রাকিবুল ইসলাম (২২), সোলাইমান ইসলাম (২১), মো. জাকারিয়া (১৮), আরাফাত হোসেন (২২)।

অভিযান পরিচালনাকালে তাদের কাছ থেকে ২৯টি ডেস্কটপ কম্পিউটার, তিনটি ল্যাপটপ, ১৫টি মোবাইল ফোন, একটি ট্যাবলেট ফোন ও বিবিধ নথিপত্র জব্দ করা হয়।

সোমবার (৩ মে) বিকেল সাড়ে চার টায় কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘চক্রটির মূল হোতা ইসমাইল হোসেন সুমন ওরফে কয়েন সুমন। সুমন জঘন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে মাস্টার্স পাস করেন। ২০১৩ সালে ছোট্ট একটি দোকানে বাচ্চাদের খেলনা ও কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। সেখান থেকেই তিনি শুরু করেন বিট কয়েনের ব্যবসা। গড়ে তোলেন বেসিক বিজ মাকেটিং নামক অনলাইন আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান। আর এর আড়ালে অবৈধ বিট কয়েন ও অনলাইন বিভিন্ন প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছিলেন ‍সুমন।’

তিনি জানান, ওই ব্যবসার মূলহোতা সুমনের শুরুতে একটি ছোট অফিস থাকলেও তা বড় হয়। বর্তমানে বাড্ডায় তিনটি ফ্লোরে ৩২ জন কর্মচারী নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল সে। প্রতিষ্ঠানটি তিনটি শিফটে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। ভার্চুয়াল ওয়ালেটে অবৈধ ও প্রতারণামূলক ব্যবসা বিট কয়েনের মাধ্যমে সুমন বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। তার ঢাকায় রয়েছে দুটি ফ্ল্যাট, প্লট, সুপার শপের ব্যবসা।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে আরও যে বিষয়গুলো সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হয় সেগুলো হলো:

বছরে ১৫ লাখের বেশি ডলার ভার্চুয়াল ওয়ালেটে লেনদেন

সুমনের রয়েছে একাধিক ভার্চুয়াল ওয়ালেট। যেখানে বিট কয়েনের মাধ্যমে অর্জিত লক্ষাধিক ডলার মজুদ রয়েছে। গত এক বছরে সে বিট কয়েনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ১২ থেকে ১৫ লাখ ডলার লেনদেন করেছে।

ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতিতে জড়িত সুমন

গ্রেফতার ইসমাইল হোসেন সুমন বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ই-মার্কেটিং সাইটে আকর্ষণীয় মূলে বিজ্ঞাপন দিত। পরবর্তী সময়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করতো। কেউ যদি তার পণ্য ক্রয় করতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতো তা তিনি হ্যাক করতেন ও টাকা আত্মসাৎ করতেন।

বিট কয়েনে আন্তর্জাতিক জুয়ারীদের সঙ্গে যোগাযোগ

বাংলাদেশে বিট কয়েন নিষিদ্ধ। তবে বেশকিছু দেশেই বিট কয়েন বৈধ। সম্প্রতি ভারতে এটা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। সিঙ্গাপুরেও বৈধ। এসব দেশের সঙ্গে লেনদেন রয়েছে বা দেশীয় বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায়ী এবং আন্তর্জাতিক জুয়ারীদের কাছে বিট কয়েন লেনদেন ও বিক্রি করতো সুমন।

গ্রেফতার অপর ১১ জন প্রতারণা, জালিয়াতি ও অবৈধ বিট কয়েন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং সহযোগী। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান র‌্যাবের মুখপাত্র।

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

খেলনার দোকান টপ নিউজ বিট কয়েন ব্যবসা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর